শিরোনাম
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি ৯৭৬ পরিবার
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৩৫
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে খুশি ৯৭৬ পরিবার
জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট
প্রিন্ট অ-অ+

নাম ফেলানী বেগম। ভিক্ষা করে চলে তার জীবন-জীবিকা। নিজের ৩ শতক জমি থাকলেও থাকার বসত ঘর ছিলো না তার। তাই সারা দিন ভিক্ষা করে রাতে অন্যের বাড়িতে ঝুপড়ি ঘরে ঘুমাতে হতো তাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-২ কর্মসূচির আওতায় ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর পেয়ে খুশি ফেলানী বেগম। তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডে।


এ রকম শত শত গৃহহীন মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় এনে সবাইকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।


ঘর পেয়ে ফেলানী বেগম বলেন, নিজের জমি থাকলেও ঘর ছিল না, ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর পেয়েছি। তাই আজ অনেক শান্তিতে ঘুমাতে পারছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি তাদের মতো সহায় সম্বলহীন পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িছেন বলে। তাকে ঘর পেতে কাউকে কোনো টাকা পয়সা দিতে হয়নি। হঠাৎ একদিন এক অফিসার এসে বলেন, আমার নামে নাকি প্রধানমন্ত্রী ঘর বরাদ্দ দিয়েছে। তারপরেই কিছুদিনের মধ্যে তাকে তার জমির উপর একটি ঘর বানিয়ে দেয়। এখন আর অন্যের বাড়িতে তাকে রাত কাটাতে হয় না।


হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ কর্মসূচির আওতায় ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার নদী ভাঙ্গনের শিকার, অতিদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্ত, বয়োবৃদ্ধ কর্মহীন পরিবার ও অসহায় পরিবারগুলোকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এতে প্রথম পর্যায়ে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৯৭৬টি পরিবারের মাঝে একটি করে আধাঁ পাঁকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।


৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ টাকা। ঘর পেয়ে খুশি ওই সব গৃহহীন পরিবারগুলো।


হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের আব্দুস ছামাদ জানান, তিস্তা নদী হামার সব ভাঙ্গি নিয়ে গেইছে। ১৫ বছর থাকি পোয়ালের (খড়) চালাত আছনোং (ছিলাম), এ্যালা (এখন) ঘর পায়া (পেয়ে) হামার ভাল হইছে। আইতত (রাতে) শান্তিতে নিন্দ (ঘুম) পারবের পাই।


কথা হয় ওই এলাকার ছকিনা বেগম, পার্শ্ববতী গ্রামের আজিয়া বেগমসহ আরো অনেকের সঙ্গে। তারাও ঘর পেয়ে অনেক খুশি। তারাও বলেন, অনেক কিছু সাহায্য পাইছি, কিন্তু টাকা পয়সা ছাড়া সরকার থেকে ঘর পাবে এমন আশা কখনও করেননি তারা। এজন্য তারা আল্লাহর নিকট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।


হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের কারণে এ উপজেলায় হাজার হাজার পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ওই সব দুঃস্থ, নদী ভাঙ্গা ও অসহায় পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে নিজেদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করেন। বাস্তবায়িত ঘরগুলোর নিয়ম মোতাবেক শত ভাগ গুনগত মান রক্ষা করে ডিজাইন অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে।


হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় প্রথম পর্যায়ে সব মানুষকে ঘর দেয়া সম্ভব হয়নি। (পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা) আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের মাধ্যমে আরো চাহিদা অনুযায়ী তালিকা প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে বাকীদের পর্যায়ক্রমে এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এজন্য নদী ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোর নামের তালিকা ইতিমধ্যে শেষ করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ীই পর্যায় ক্রমে সকলেই ঘর বরাদ্দ পাবেন।


স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-২ কর্মসূচির আওতায় ‘জমি আছে, ঘর নাই’ প্রকল্পের মাধ্যমে জেলায় মোট ৩ হাজার ৯৮১টি পরিবারকে বসতবাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এ কর্মসূচি আগামীতেও পর্যায়ক্রমে চলবে। নদী ভাঙ্গন কবলিত তিস্তা পারের কোনো গৃহহীন পরিবার এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবেন না।


বিবার্তা/জিন্না/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com