শিরোনাম
তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে লতিফ সিদ্দিকী
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:৪১
তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে লতিফ সিদ্দিকী
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি আমরণ অনশন পালন করছেন সাবেক মন্ত্রী ও টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকী। এর ফলে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে।


গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় প্রতিকার না পেয়ে সোমবার অবস্থান কর্মসূচি থেকে আমরণ অনশন পালন করছেন তিনি। প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে লেপ, তোষক ও তাঁবু নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান নিবেন বলে জানিয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী।


রবিবার দুপুর ১২টার দিকে কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি এলাকায় লতির সিদ্দিকীর গাড়িতে হামলার প্রায় দুই ঘণ্টা পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন লতিফ সিদ্দিকী। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পরও তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। দিনের আলো ফুরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে শীতের তীব্রতাও বাড়তে থাকায় এক পর্যায়ে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়েন তিনি।


কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনেই রাত কাটাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সাবেক এই সদস্য। রাতে থাকার জন্য ইতিমধ্যেই তাঁবু টাঙ্গানো হয়েছে। এছাড়াও বিকেলে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
তিন দফা দাবির বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়ে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছেন। এতে আশ্বস্ত হয়ে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি, এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার।


তিনি বলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর ইন্ধনে আমার গাড়িবহরে হামলা করেছে। এসময় আমার গাড়িসহ আরো তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে আমার কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।


উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর মহাজোট সরকারে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্যও হন তিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এসময় তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।


২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে হজ, তাবলিগ জামাত এবং দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করে দেশ ও বিদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সর্বোচ্চ সমালোচিত হন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ কারণে ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার ও মন্ত্রীসভা থেকে অপসারণ করা হয়। পরবর্তীতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার নামে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।


এ অভিযোগেই তিনি দেশে ফিরে আত্মসমর্পণও করেন। কয়েক মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হন তিনি। কারাগার থেকে মুক্ত হয়েই তিনি সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।


আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দল থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ‘নৌকা’ প্রতীকের সোহেল হাজারীর বিরুদ্ধে নির্বাচনের জন্য মাঠে নামেন। গত ১০ ডিসেম্বর লতিফ সিদ্দিকীকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম এই প্রতীক বরাদ্দ দেন।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com