শিরোনাম
যৌন নিপীড়ন ধামাচাপা দিতে চাঁদাবাজির মামলার অভিযোগ
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৪
যৌন নিপীড়ন ধামাচাপা দিতে চাঁদাবাজির মামলার অভিযোগ
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জনের যৌন নিপীড়ন ধামাচাপা দিতে একটি বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মচারীসহ চার যুবকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার রেজা।


শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে তাদের মধ্যে ৩ জনকে র‌্যাব সদস্যরা আটক করার পর জয়পুরহাট সদর থানায় সোপর্দ করে।


আটককৃতরা হলেন- জয়পুরহাট শহরের একটি বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মচারী ও সদর উপজেলার পাঁচুর চক গ্রামের করিম মণ্ডলের মেয়ে নাহিদা আক্তার (২৮), নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে রুস্তম আলী (২৯) ও একই গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে শাহজাহান আলী (২৯)। এই মামলার অপর আসামী একই উপজেলার পূর্ব চক প্রাসাদ গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাফাত হোসেন (২১) এখনো পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।


মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, গত ৫ মাস আগে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের নির্মাণ কাজের টেন্ডারের পর থেকে অভিযুক্তরা সিভিল সার্জনের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে সিভিল সার্জন বিভিন্ন সময় তাদের ৬ লাখ টাকা প্রদান করেন। পরে সিভিল সার্জনকে জড়িয়ে চারিত্রিক অপবাদ দেয়ার হুমকি দিয়ে আরো চাঁদা দাবি করলে সিভিল সার্জন অভিযুক্তদের আরো ৭০ হাজার টাকা দেন। পরে এমন আরো হুমকি দেয়ায় তিনি এ ব্যাপারে জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পে একটি অভিযোগ দিলে র‌্যাব সদস্যরা অভিযুক্তদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন।


তবে সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ করে আটককৃত নাহিদা আক্তারের মা নাছিমা বেগম জানান, দরিদ্র পরিবারের নাহিদা সংসারে বাড়তি আয় জোগান দিতে জেলা শহরের গ্রাজুয়েট ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের ওই বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন, পরে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাফির সহকারী হিসেবে যুক্ত হন, যেখানে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার রেজা সনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। আল্ট্রাসনোগ্রাফির সহকারী হওয়ায় তিনি বিভিন্ন সময় নাহিদাকে দিয়ে ডা. রেজা শরীরের বিভিন্ন অংশ ম্যাসেজ করে নেয়া সহ কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে ডা. রেজা নাহিদার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশে হাত দেয়াসহ আপত্তিকর আচরণ করতে থাকেন।


নাহিদার মা বলেন, এরমধ্যে কে বা কাহারা কৌশলে গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে ডা. রেজার এসব আপত্তিকর ঘটনাগুলির কিছু ভিডিও ফুটেজ ধারণ করেন। ভিডিও ফুটেজের ঘটনা জানতে পারার কারণে নাহিদা লোক-লজ্জা থেকে বাঁচতে এক বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেয়। পরে তার স্বামী এ ঘটনা জানায় সেও এক সন্তানসহ নাহিদাকে ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে চাকরির অভিজ্ঞতা থাকার কারণে নাহিদাকে চাকরির দেয়ার নিশ্চয়তা দিলেও নাহিদা মান-সন্মান বজায় রাখতে আর কোথাও চাকরি করেনি। আমরা গরীব মানুষ বাবা, মিথ্যা মামলায় আমার মেয়েকে ফাঁসানো হয়েছে।


জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার রেজাকে কয়েকবার মোবাইলে কল দেয় হলেও তিনি মোবাইল না ধরায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর ফেরদৌস আলম জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের আটক করে জয়পুরহাট সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।


জয়পুরহাট সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে মামলা গ্রহণ করে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। পরে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বিবার্তা/শামীম/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com