শিরোনাম
স্বনির্ভর হচ্ছে দৌলতপুরের প্রতিবন্ধীরা
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:৩১
স্বনির্ভর হচ্ছে দৌলতপুরের প্রতিবন্ধীরা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আজ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। প্রতিবন্ধীরা সমাজ বা পরিবারের বোঝা নয়। তারাও পারে আত্মনির্ভরশীল হতে। পারে পরিবারের একজন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হতে। তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কয়েক’শ প্রতিবন্ধী। বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলেছে স্বাবলম্বী করে। এর প্রসার ঘটাতে প্রয়োজন সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার।


‘ভিক্ষা নয় কর্ম চাই, মানুষ হিসেবে বাঁচতে চাই’ এই বানীকে প্রতিপাদ্য করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ‘সবার সাথে জীবন গড়বো’ একটি প্রতিবন্ধী সংগঠন ২০১৫ সালে এপ্রিল মাসে নিজেরা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার লক্ষে কাজ শুরু করে। কেউ সেলাইয়ের কাজ শিখেছেন, কেউ কাপড়ের ব্যাগ তৈরি করে বিক্রয় করছেন, আবার কেউ কাগজের প্যাকেট (ঠোঙ্গা) তৈরি করে বিক্রয় করে পরনির্ভরশীলতা অভিশাপ মুক্ত হয়ে নিজেদের ও পরিবারকে গর্বিত করেছেন। অনেকে তার পূর্ব থেকে নিজেদেরকে করেছে স্বনির্ভর।


সবার সাথে জীবন গড়বো প্রতিবন্ধী সংগঠনের সভাপতি মো. রুপচাঁদ আলী বলেন, প্রতিবন্ধীরা সমাজের যেমন বোঝা, তেমনি পরিবারেরও বোঝা। এই বোঝা ও অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে আমরা ক’জন প্রতিবন্ধী সেলাই ও কাপড়ের ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এখন আমরা সবাই স্বাবলম্বী। আমাদের দেখাদেখি অনেক প্রতিবন্ধী স্বনির্ভর হয়েছে।



আত্মনির্ভরশীলতার সংখ্যা এখন প্রায় ৪’শ ছাড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে প্রয়োজন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতার। অদম্য ইচ্ছা থাকা সত্বেও অনেক প্রতিবন্ধী রয়েছেন যারা অর্থাভাবে স্বাবলম্বী হতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানালেন আহাদুল ইসলাম নামে এক প্রতিবন্ধী।


দৌলতপুরে প্রায় ১৭ হাজার প্রতিবন্ধী রয়েছে। কিন্তু এই বৃহৎ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র একটি প্রতিবন্ধী ও অটিজম স্কুল রয়েছে, যেখানে এক থেকে দেড়’শ জনের জন্য রয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। তাও সেখানে কোনো সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা নেই। তারপরও তারা এই মহৎ কাজটি করে যাচ্ছেন সমাজের বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তদের পাশে থেকে। আর এর প্রসার ও ব্যাপ্তি ঘটনাতে সরকারি বা বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতার হাত প্রসারের আহ্বান জানিয়েছেন দৌলতপুর প্রতিবন্ধী ও অটিজম স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ মজনুল কবির।


তবে প্রতিবন্ধী ভাতাসহ প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ছানোয়ার আলী।



প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝ নয়, এরাও পরে নিজেদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে। প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা বা সবধরনের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার। তা’হলেই সমাজের অবহেলিত বা সুবিধা বঞ্চিত বৃহৎজনগোষ্ঠীর একটি অংশ প্রতিবন্ধীরাও স্বনির্ভর হয়ে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে হবে অংশীদার। আজকের এই প্রতিবন্ধী দিবসে এই হোক সবার প্রত্যাশা।


বিবার্তা/শরীফুল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com