শিরোনাম
ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা সাদুল্যাপুরের আমন চাষীরা
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:৫০
ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা সাদুল্যাপুরের আমন চাষীরা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় ইঁদুরের অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। সম্প্রতি এ অঞ্চলে আমন ধানের শীষ বেরুতে শুরু করলেও আশা দেখছেন না তারা। আমন ধান ঘরে তুলে চাহিদা মেটানোর পরিকল্পনা করার কথা থাকলেও এখন তারা উল্টো দুশ্চিন্তায় পড়েছন।


রসুলপুর ইউনিয়নের আরাজী তরফ কামাল গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, তিনি এবার দুই একর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছেন। এখন প্রায় ধানের শীষ বের হচ্ছে। কিন্তু ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আমন ধানে ইঁদুরের উপদ্রব বেশি। এ জন্য ঔষধ ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। এমনকি ক্ষেতের মধ্যে পলিথিন বেধে দিয়েছেন। আশেপাশের অনেক কৃষক ক্ষেতের চারপাশে ইঁদুর মারার ফাঁদ পেতে রেখেছেন। তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ফাঁদ দিয়ে ইঁদুর মারার চেষ্টা করছেন তারা।


রবিবার সন্ধ্যার পর অন্তত ৩০টি ইঁদুর মেরেছেন আব্দুর রহমান। কিন্তু বিদ্যুৎ দিয়ে ইঁদুর মারা বিপজ্জনক হলেও কেন এই ঝুঁকি নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত সন্ধ্যার পর আমি কারেন্ট সংযোগ দেই, রাত ১১টার মধ্যেই ইঁদুর কারেন্টে শক (বিদ্যুৎস্পৃষ্ট) করে মারা যায়। কারেন্ট সংযোগ দেয়া শুরু থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন পর্যন্ত আমি পাহাড়ায় থাকি, যাতে কোনো বিপদ না হয়।


ছান্দিয়াপুর গ্রামের কৃষক ছয়েছ উদ্দিন, আজাদ হোসেন, আবুল হোসেন, লুৎফর রহমানসহ আরও অনেক কৃষক জানান, ইঁদুরর এবার আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এভাবে ক্ষতি করলে আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে পারবো না।


এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রভাত চন্দ্র অধিকারী বলেন, এবারে এ ইউনিয়নে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। ধানের জমির আইল পরিষ্কার রাখা, গর্ত বন্ধ করে দেওয়া এবং অন্য গর্তের মুখে পানি ঢালতে হবে। ইঁদুর দমনের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় ক্ষেতে এমন কিছু ব্যবস্থা করা; যাতে সব সময় শব্দ হয়। শব্দ হলে ইঁদুরর ভয়ে ক্ষেতে ঢুকবে না। এতে চাষীরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।


সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার খাজানুর রহমান জানান, মাঠ ফসলের বৃদ্ধির সাথে সাথে ইঁদুর প্রজনন প্রক্রিয়াও চালাতে থাকে। তাই ফসলের থোড় ও পাকা অবস্থায় ইঁদুর দমন ব্যবস্থা ততটা কার্যকর হয় না। কারণ এ সময় মাঠে ইঁদুরের সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যায়। ক্ষতির মাত্রা বেশি হলেই কেবল ইঁদুরের উপস্থিতি বোঝা যায়। তখন দমন ব্যবস্থা ততটা কার্যকরী হয় না। কারণ মাঠের ফসল রেখে ইঁদুর বিষটোপ খেতে চায় না এবং দমন খরচ অনেক গুণ বেড়ে যায়। তারপরও ইঁদুর নিধন বিষয়ে কৃষকদের নানা কৌশল বা পরামর্শ অব্যাহত আছে।


বিবার্তা/তোফায়েল/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com