শিরোনাম
সাতক্ষীরায় পানিতে শিশুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৪৪
সাতক্ষীরায় পানিতে শিশুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শিশু সন্তানকে পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যার খবরে নিজের অসুস্থতা ভুলে হাসপাতাল ছেড়ে ছুটে গেলেন এক বাবা। এর পর নিজের শিশুকে দেখেই ফের জ্ঞান হারালেন তিনি। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার দেবহাটার পুস্পকাটিতে। পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে।


তার স্বজনরা জানান, পুস্পকাটি গ্রামের ফরহাদ হোসেন তার শিশু কন্যা ফারিয়াকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভোমরা বন্দরে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে কে বা কারা তার মাথায় সজোরে লাঠির আঘাত করে। ফরহাদ মুহূর্তেই জ্ঞান হারান। এই সুযোগে শিশু ফারিয়াকে (৪) দুর্বৃত্তরা নিকটস্থ পুকুরের পানিতে ছুড়ে ফেলে। স্থানীয়রা ফরহাদকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করেন।


এদিকে শুক্রবার সকালে কিছুটা সুস্থ হতেই ফরহাদের কাছে খবর আসে যে তার মেয়ে ফারিয়ার লাশ পুকুরে ভাসছে। এ খবর শুনে নিজের অসুস্থতার কথা ভুলে ফরহাদ দ্রুত ছুটে যান তার মেয়ের কাছে। আর তখনই মেয়ের লাশ দেখে জ্ঞান হারান তিনি।


তবে এলাকাবাসী বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, ফরহাদকে কেউ লাঠি দিয়ে আঘাত করেনি। এমনকি তার মেয়েকে পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত নয়। তারা বলেন, রাজনৈতিক কারণে ফরহাদের প্রতিবেশী মোকছেদ আলি এখন জেলে রয়েছে। তাকে জেলে পাঠানোর জন্য কয়েকজন লোককে সে দায়ি করে আসছিল। প্রতিশোধ নিতেই ফরহাদ মোকছেদ পরিবারের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়ে তার মেয়েকে হত্যার দায় এলাকার কয়েক যুবকের ওপর চাপাতে এই নাটক সাজিয়েছে। তারা আরো জানান, ফরহাদের দেহে কোনো আঘাতের চিহৃ নেই।


আলিপুর ইউপি যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন জানান, ফরহাদ একজন ধূর্ত লোক। তিনি নিজেই একটি হত্যা মামলার আসামি। তিনি আরো জানান, ফরহাদ তার মেয়েকে হত্যা আগে মোকছেদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেয়। মোকছেদ ২০১৩ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রতীকী কবর তৈরি করে দেবহাটায় ব্যাপক সহিংসতা চালায়। ফরহাদ তার নিজের মেয়েকে হত্যা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নাম বলছে। যারা মোকছেদকে ধরিয়ে দিয়েছিল। এটি একটি সাজানো নাটক বলে তিনি জানান।


দেবহাটা থানার ওসি সৈয়দ মান্নান আলি জানান, শিশু ফারিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিষয়টি অনেকটাই রহস্যজনক। পানিতে ডুবে মারা যাওয়া কিংবা আঘাত করে হত্যার কোনো চিহৃই শিশুটির দেহে নেই। এমনকি ফরহাদের দেহেও আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়নি। তদন্ত না করে কোনো কিছু নির্ণয় করা কঠিন জানিয়ে তিনি বলেন ফরহাদকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


বিবার্তা/শহিদুল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com