শিরোনাম
মির্জাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:২১
মির্জাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছেই। উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে এ বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। সরজমিনে এর প্রমাণও মিলেছে।


এ বালু উত্তোলন করে যেমন একদিকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। আবার অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্যও হারাচ্ছে দিনের পর দিন। আর ঐ সকল এলাকার বিভিন্ন স্থানের নদীর পারের বসত বাড়িগুলো বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে লোকজন।


এলাকাবাসীর অভিযোগ সরকার দলীয় ও এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা এ অবৈধ কাজ করে আসছে। সরজমিনে দেখা যায়, উয়ার্শী ইউনিয়নের ৭-১০টি স্পটে এ অবৈধ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলনকৃত বালি দিয়ে ভিটি করে সেখান থেকে তা বিক্রি করা হচ্ছে।


ড্রেজার মেশিনে এসব বালু উত্তোলন করা হয়। এই বালু আবার উয়ার্শী ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পার্শ্ব থেকেই ড্রাম ট্রাক-মাহেন্দ্র ট্রাক যোগে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ মহল। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বালু উত্তোলন ও বিক্রি চলে। এর ফলে এলাকার বিভিন্ন পাকা ও কাঁচা রাস্তার স্থায়িত্ব অতি অল্পতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে রাস্তা নষ্ট হওয়ার ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।


অথচ ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা বাগান ছড়া ও নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু এ নির্দেশনাগুলোর কোনো তোয়াক্কা না করেই দিনের পর দিন এ অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে।


এলাকাবাসী জানায়, বালু উত্তোলনের ব্যবসা বন্ধের জন্য তদের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানালেও তা বন্ধ হয় না। শুধুমাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলে ঐ কয়েকদিনই ড্রেজার বন্ধ থাকে, কিন্তু সুযোগ বুঝে তা আবারো চালু করা হয়।


অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ অবৈধ বালু ব্যবসার সাথে জড়িত পুলিশ কনস্টেবল রুহুল, ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার কমল, বর্তমান উয়ার্শী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুটন ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর খান মনা, বর্তমান সদস্য মো. আহসান খান আছান, আবুল হোসেন খান ভুট্টুসহ প্রভাবশালী কয়েকজন।



এ ব্যাপারে, পুলিশ কনস্টেবল রুহুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বালু ব্যবসার বিষয়ে কিছু জানি না। যুবলীগ নেতা আহসান খান আছানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না, আমি বালু ব্যবসার সাথে জড়িত না। তবে আমি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতাম।


এ ছাড়াও উপজেলার ফতেপুর ও জামুর্কী ইউনিয়নে একইভাবে অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আজগর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং অতি দ্রুত ঐ সকল এলাকাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।


মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন জানান, বিষয়টি আমি জত টুক জানি আমাদের এসিল্যান্ট অফিস থেকে পরিদর্শন করে এসেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিবো।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com