অন্তঃসত্ত্বা শাপলা বেগম (২৮) তিন মাস আগে স্থানীয় অগ্রগতি বহুমুখী সমিতি থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সুদে আসলে মোট ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। তারপরও সমিতি থেকে সুদ হিসেবে আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়।

কিন্তু সেই টাকা দিতে না পারায় বগুড়া পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান দারুনসহ সমিতির লোকজন শাপলা বেগমের বাড়িতে গিয়ে আসবাবপত্র বের করে নেয়। এতে বাধা দিতে গেলে শাপলার পেটে লাথি মারে ছাত্রদল নেতা রবিউল হাসান দারুন। এতে ঘটনাস্থলেই শাপলা বেগমের গর্ভপাত হয়ে যায়!

গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা শাপলাকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানেই শাপলা চিকিৎসাধীন আছেন।

শজিমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক জানান, শাপলা বেগম পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার গর্ভপাত হয়ে গেছে।

এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছেন নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আব্দুল হাই।

গত রবিবার রাতে বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ শাপলা বেগম উত্তর চেলোপাড়ার শফিউল ইসলাম শফির স্ত্রী।

শাপলার স্বামী শফিউল ইসলাম জানান, তিনি গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়ার্ড বয়ের কাজ করেন। তাদের ৮ বছরের একটি ছেলে এবং ৫ বছরের একটি মেয়ে আছে। নানা সমস্যায় পড়ে তারা সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তবে ১৫ দিন আগেই সেই টাকা সুদ এবং আসল মিলে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেন। এরপর অতিরিক্ত আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এই টাকা দিতে না পারায় তার ঘরের আসবাবপত্রগুলো নিয়ে গেছে ছত্রদলের নেতা রবিউল হাসান দারুনসহ সমিতির লোকজন। বর্তমানে নিরাপত্তার অভাবে চেলোপাড়ার বাড়ি ছেড়ে দুই সন্তান নিয়ে গাবতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারে অবস্থান করছেন।

এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান বলেন, গৃহবধূর শাশুড়ি বাদী হয়ে ছাত্রদল নেতা রবিউল হাসান দারুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশি অভিযান চলছে।

বিবার্তা/নজরুল/কামরুল