হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নৌকাবাইচ উপভোগ করতে হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার বিনোদন পিপাসু হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন।

সোমবার বিকেলে উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফেরদৌস আলম নৌসাদের আয়োজনে ও ৪ গ্রামের লোকজনের সার্বিক সহযোগিতায় এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় ঢাক-ঢোলের তালে তালে গ্রাম বাংলার গান আর বৈঠার ছন্দে মাতিয়ে তুলেছিল কুশিয়ারা নদীর ঢেউকে। আর সেই ছন্দে ছন্দে তাল মিলিয়ে নদীর তীরে হাজার হাজার শিশু-কিশোর-কিশোরী, থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত নেচে-গেয়ে এ নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন।

নৌকা বাইচ শুরুর আগে বিকেল থেকে নদীর তীরে বিভিন্ন নৌকায় মানুষে ভরে যায়। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় মোট আটটি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার আলাগদী গ্রামের সোনার বাংলা, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে নবীগঞ্জের বাগাউড়া গ্রামের পঙ্খিরাজ, তৃতীয় হয়েছে নবীগঞ্জের হালিতলা গ্রামের শাহজালালের তরী।

পরে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও ধারাভাষ্যকার এম এস লিমনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী।

তিনি বলেন, গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ ফিরিয়ে আনতে নৌকাবাইচের বিকল্প নেই। নৌকাবাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। এটাকে জাগ্রত রাখতে হবে। আজকের হাজার হাজার উপস্থিত দর্শকই প্রমাণ করে এই নৌকাবাইচের কত জনপ্রিয়তা, এসব সংস্কৃতি তুলে ধরলে দেশ থেকে অপসংস্কৃতি দূর হবে। তাই নতুন প্রজন্মের মাঝে এ সংস্কৃতি অব্যাহত রেখে এ দেশ থেকে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদ দূর করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, একটি মহল এ দেশকে জঙ্গীবাদ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই। তারা এখনো তৎপর রয়েছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে এ ধরণের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আরো বেশি করে আয়োজন করা প্রয়োজন।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান শেফু, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, দীঘলবাক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ, ইনাতগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান কাজল, নবীগঞ্জের কবি ও সাংবাদিক নিলুফা ইয়াসমিন, নবীগঞ্জ পৌর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, নবীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হাছান লিটন, এনটিভি নবীগঞ্জ প্রতিনিধি মহিবুর রহমান চৌধুরী তছনু, মিজানুর রহমান সুহেল, প্রবাস বাংলা টিভির প্রতিনিধি ছনি চৌধুরী প্রমুখ।

বিজয়ী দলকে প্রথম পুরস্কার দেয়া হয় একটি ঘোড়া, দ্বিতীয় পুরস্কার ২১ ইঞ্চি রঙিন টিভি, তৃতীয় পুরস্কার একটি খাসি, চতুর্থ একটি টেবিল ফ্যান, পঞ্চম একটি টেবিল ফ্যান দেয়া হয়।

বিবার্তা/ছনি/জাকিয়া