বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে উৎপাদিত হচ্ছে ড্রাগন ফল। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরাও এ ফল চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফল অতি সহজে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। এছাড়া রোগ-বালাই কম হওয়ায় এবং বাজারদর ভালো থাকায় ড্রাগন ফল চাষে কৃষকদের উৎসাহ বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, থাইল্যান্ডে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয় জনপ্রিয় ফল ড্রাগন ফ্রুট। ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সুষম ফল হিসেবে এর জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। তাছাড়া এ ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবার।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর আঞ্চলিক হর্টিকালচারের উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার হালদার বলেন, ব্রাঞ্চ কেটে মাটিতে লাগালেই এ গাছ বাড়তে থাকে। প্রতিটি ব্রাঞ্চ বা চারা ৩০ টাকা করে বিক্রি হয়। বছরে দুই এক বার সার ব্যবস্থাপনা ছাড়া তেমন একটা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। সাধারণত এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ড্রাগন ফল পাওয়া যায়। একটি গাছে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত ফল ধরে, ওজনে এক একটি ফল আধা কেজির ওপর হয়।

তিনি আরো বলেন, বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদে ড্রাগন চাষ করে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও লাভবান হওয়া সম্ভব। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ড্রাগন ফলের বাজার মূল্য ভালো, প্রতি কেজি ফল বাজারভেদে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি হয়। তবে আমাদের এখানে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবুল কালাম আযাদ জানান, খাদ্যে সমৃদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলে ধান, ডাল ফসলের পর্যাপ্ত উৎপাদন হলেও ফলের দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে। তবে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও বিদেশি ফল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও খামারীদের মাঝে বিদেশি এ ফলের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে আরো প্রচার প্রচারণার প্রয়োজন রয়েছে।

আবুল কালাম আযাদ জানান, এতে বিদেশি ফলের আমদানী নির্ভরতা কমবে। যে কারণে বাবুগঞ্জসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে এই ফল চাষের চাহিদা বাড়বে। নতুন করে সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। তাছাড়া সুস্বাদু পুষ্টিকর এবং উপকারী এই ফল হাতের নাগালে পেলে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি বাড়বে।

বিবার্তা/আরিফ/জহির