নারকেল ও ডাবের চাহিদা পূরণে ভিয়েতনাম থেকে খাটো জাতের নারকেল চারা আমদানি করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় লাগানো শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ জাতের সোয়া লাখ চারা রোপণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থকরী ফসলের মধ্যে নারকেল অন্যতম। ভিয়েতনাম থেকে দুই ধরনের খাটো জাতের নারকেল চারা এনেছে সরকার। এর একটি হল সিয়াম গ্রিন কোকোনাট ও অন্যটি সিয়াম ব্লু। এটি ডাব হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই জনপ্রিয়।
এই নারকেল গাছ সাভারের রাজালাখের হর্টিকালচার সেন্টারে রোপন করা হয়েছে। গাছ রোপনের ২৮ মাসের মাথায় ওই নারকেল গাছে প্রায় শতাধিক নারকেল ধরেছে। এ উপলক্ষে সোমবার দুপুরে সাভারের রাজালাখ এলাকায় হর্টিকালচার সেন্টারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই নারকেল গাছের চারা রোপনের কথা জানান কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ।
তিনি বলেন, এই নারকেল গাছে অল্প সময়ে অনেক নারকেল ধরে। তাই দিন দিন বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নারকেলের এই জাত। বছরব্যাপি ফল উদপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই নারকেল গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। এছাড়া এই হর্টিকালচার সেন্টার প্রায় ১৫০০ নারকেল চারা রয়েছে। প্রত্যেকটি চারা পাঁচ’শ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নারকেলের পাতা, ফুল, ফল, কাণ্ড, শিকড় সব কিছুই বিভিন্ন ছোট-বড় শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নানারকম মুখরোচক খাবার তৈরিতেও নারকেল ব্যবহৃত হয়। এছাড়া সুস্বাদু পানীয় ও রোগীর পথ্য হিসেবে ডাব ব্যবহার হয়ে থাকে।
ড. মেহেদী বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ নারকেল গাছ লম্বা জাতের। ফলন তুলনামূলক কম। এ গাছের ফলপ্রাপ্তির সংখ্যা বছরে গড়ে ৩০-৪০টি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অতিমাত্রায় ডাব বিক্রি হওয়ায় নারকেল গাছের ফল বা (বীজ) প্রাপ্তির সংখ্যা দিন-দিন কমে আসছে। এ পরিস্থিতিতে ভিয়েতনাম থেকে ছোট জাতের নারকেলের চারা আমদানি করা হয়েছে। এ জাতের ডাবও খুবই সুস্বাদু। এছাড়া ফলনও লম্বা জাতের গাছের চেয়ে অনেক বেশি। এ গাছে বছরে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০টি ফল ধরে। গাছ রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে ফুল ফোটা শুরু হয়। সব ধরনের মাটিতেই এ গাছ লাগানো সম্ভব। তাছাড়া এ জাতের গাছ লবণাক্ততা অনেক বেশি সহ্য করতে পারে। গাছ খাটো হওয়ায় পরিচর্যাও সহজ।
এ বিষয়ে সাভার হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ ইফফাত আরা ইসলাম বলেন, গাছ রোপনের ২৮ মাসের মাধায় গাছে নারকেল ধরেছে। এছাড়া এখান থেকে বিভিন্ন মানুষের মাঝে নারকেলে চারা বিক্রি করা হচ্ছে। ভিয়েতনামের উদ্ভাবিত ওপি জাতের নারকেলে আশার আলো দেখছে বাংলাদেশের চাষীরা। সারাদেশে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
এদিকে সাভারের হর্টিকালচার সেন্টার থেকে অনেক কৃষক প্রতিটি চারা ৫০০ টাকা করে কিনে এনেও লাগিয়েছেন বাগানে। গাছের বৃদ্ধি দেখে বুকভরা আশা নিয়ে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তারা। এছাড়া প্রতিদিনেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক মানুষ এই নারকেল গাছ দেখতে ছুটে আসছেন।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এই নারকেল গাছের চারা রোপনকারীদের সবধরণের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
বিবার্তা/শরিফুল/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]