টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গার্মেন্টস কর্মী শিউলী হত্যার এক মাস ও পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী শিল্পী হত্যার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও হত্যাকাণ্ড দুটির রহস্যের জট খোলেনি এখনো। রহস্য উদ্ঘাটন পুলিশি তৎপরতার কথা জানালেও বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বলে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ।
গত ২৬ জুলাই সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে বাসযোগে পুষ্টকামুরী চরপাড়া গ্রামের শরীফ খানের স্ত্রী গার্মেন্টস কর্মী শিউলী তার কর্মস্থল গোড়াই শিল্পাঞ্চলের কমফিট কম্পোজিট গার্মেন্টসে যাচ্ছিলেন। পরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার বাওয়ার কুমারজানী নামক স্থান থেকে শিউলীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে ১৩ আগস্ট শিল্প পুলিশে কর্মরত ছুটিতে আসা মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের এএসআই মামুন দুপুরের খাবার শেষে তার নিজ কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। এসময় দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে মামুন এবং তার স্ত্রী শিল্পীকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তাদেরকে কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়ার পর সন্ধ্যায় শিল্পী মারা যান। উন্নত চিকিৎসার জন্য মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গার্মেন্টস কর্মী শিউলী হত্যার ১৫দিন পর পুলিশ বাসটি আটক সহ বাসচালক রনি শেখ ও তার ছোট ভাই বাসের হেলপার রানা শেখকে গ্রেফতার করে। পরে বাসচালকের বক্তব্যের ভিত্তিতে শিউলীর সহকর্মী আরিফকে গ্রেফতার করে। বাস চালকের ভাষ্য মতে সহকর্মী আরিফই শিউলীকে ধস্তাধস্তির এক পর্যায় বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ বাসচালকের বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়ে আরিফকে দ্বিতীয়বার রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। পরে আদালত আরিফের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। অথচ শিউলীর অন্য একাধিক সহকর্মী এবং আত্মীয়দের ভাষ্য মতে আরিফ ঘটনার দিন অন্য বাসে কর্মস্থলে গিয়েছিলেন।
এদিকে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের শিল্প পুলিশের এএসআই ফিরোজ আল মামুনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শিল্পী বেগম খুন হওয়ার ঘটনায় শিল্পীর ভাই মোস্তফা এএসআই মামুন, শিল্পীর দেবর সানি, শ্বশুর আবুল কাশেম এবং শাশুড়ি অজুফা বেগমকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
এই মামলায় গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেম পুত্রবধূ শিল্পী হত্যার দায় স্বীকার করে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুপম কুমারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও বিষয়টির রহস্য রয়ে যায়। নিজের শরীরের ভারসাম্যতা যে ব্যক্তি ঠিক রাখতে পারে না সেই অসুস্থ আবুল কাশেম কিভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাবে এই প্রশ্ন নিহতের স্বজনদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
মির্জাপুর থানার ওসি একেএম মিজানুল হক বলেন, শিউলী এবং শিল্পী হত্যা মামলায় নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। নতুন কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ বা তথ্য পেলে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিবার্তা/তোফাজ্জল/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]