রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জাতিগত নিধনের বর্ষপূর্তির দিনে ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হত্যাযজ্ঞের মুখে পালিয়ে কক্সবাজার ও টেকনাফের আশ্রয়শিবিরে আশ্রয় নেয়া কয়েকশ’ রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।
আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত টেকনাফ এবং উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী ও মধুরছড়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে এক সঙ্গে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রোহিঙ্গারা।
কুতুপালংয়ের ক্যাম্পের বিক্ষোভে বিশাল ব্যানারে লেখা ছিল, রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস, ২৫ আগস্ট, ২০১৮। কেউ কেউ `রোহিঙ্গাদের রক্ষা কর` লেখা বন্দনা পরে ছিলেন। কেউ পতাকা ওড়াচ্ছিলেন।
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও সমাবেশে কয়েকশ’ রোহিঙ্গা অংশ নিয়েছেন। এ সময় তারা জাতিসংঘের কাছে আমরা ন্যায়বিচার চাই স্লোগান দিতে থাকেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযান থেকে বাঁচতে গত বছরের আগস্ট থেকে আট লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘ যেটাকে জাতিগত নিধনের জলন্ত উদাহরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের এই ঢলে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণ নতুন করে হুমকিতে পড়েছে। দেশটির নেত্রী নোবেলজয়ী অং সান সু চির ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
পশ্চিমা মিত্ররা একসময় সুচিকে দেশটির গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়ন বন্ধে তিনি কোনো উদ্যোগ নিতে অস্বীকার করায় তাকে সমালোচিত হতে হয়েছে। তার সরকারকে সেই সঙ্গে নানামুখী চাপ সামলাতে হচ্ছে।
সম্প্রতি পালিয়ে আসা অর্ধডজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শূন্য গ্রাম ও আগুনে কালো হয়ে যাওয়া বাড়িঘরের মধ্যে মাসের পর মাস জীবন সংগ্রাম চালিয়ে আসার পর রোহিঙ্গারা সেনাবাহিনীর গ্রেফতার ও হয়রানির ভয়ে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অনেকেই দেশে ফেরার পর ফের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)৷
আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থার এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, দেশে ফেরা শরণার্থীদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি মিয়ানমার সরকার দিয়েছিল, প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের নির্যাতন সেই প্রতিশ্রুতিকে মিথ্যায় পর্যবসিত করেছে৷ এজন্য রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আগে বিষয়টিতে জাতিসংঘের নজরদারিসহ আন্তর্জাতিকভাবে তাদের সুরক্ষা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি৷
এদিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একমত হলেও মিয়ানমার এখনও তাদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করে নি। এক্ষেত্রে তারা এক ধরণের ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছে।
বিবার্তা/শারমিন/শাহনাজ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]