শিরোনাম
রংপুরে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুরহাট
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০৯:৫১
রংপুরে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুরহাট
রংপুর ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

ঈদের বাকি আরো তিনদিন। এরই মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্দচারণায় জমে উঠেছে রংপুর বিভাগের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে। দেশী গরুর চাহিদা থাকলেও শঙ্কা বাড়ছে ভারতীয় গরুর আমদানি নিয়ে।


তবে এবার চাহিদার চেয়ে রংপুর বিভাগে আড়াই লাখেরও বেশি পশু উদ্বৃত্ত আছে। এছাড়া এ বছর হাটগুলোতে কদর বেড়েছে দেশী গরুর পাশাপাশি ছাগল কেনাবেচায়।


রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিস জানান, এই বিভাগের আট জেলায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ২১ জন খামারি সাড়ে ৪ লাখেরও বেশি গরু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। এছাড়া ২ লাখের ওপর বাসা-বাড়িতে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রায় ৯ লাখ পশু রয়েছে। এর মধ্যে ছাগল ও ভেড়া রয়েছে প্রায় ৩ লাখ। এর মধ্যে শুধু রংপুর জেলার ৩৩ হাজার খামারে রয়েছে ২ লাখেরও বেশি গরু। এবার রংপুর বিভাগে ১৪ লাখ কোরবানির পশু মজুদ থাকলেও চাহিদা রয়েছে সাড়ে এগারো লাখ পশুর। উদ্বৃত্ত প্রায় আড়াই লাখের বেশি কোরবানির পশু ঢাকা ও চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য পাঠানো হবে।


এদিকে চাহিদার চেয়ে বেশি গরু থাকায় ভারতীয় গরুর উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশী গরুতেই লাভের আশায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন রংপুর অঞ্চলের হাটবাজারে গরু নিয়ে আসা খামারিরা। কোরবানিতে দেশি ও শংকর জাতের গরু চাহিদা বেশি থাকায় খামারিরা এ ধরনের গরু স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মোটা তাজাকরণ শুরু করেছেন বছর ধরে।


এরই মধ্যে রংপুর অঞ্চলের স্থানীয় ব্যবসায়ী ও খামারি এবং ব্যাপারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশু অনুযায়ী দরদাম করে কিনতে শুরু করেছেন।


রংপুর নগরীর খাসবাগ এলাকার খামারি শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ৬০টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ওই গরুগুলো বিক্রি করলে তাকে অনেক লোকসান গুনতে হবে। তাই এখনো গরু বিক্রি করেননি। তবে ভারতীয় গরু বাজারে না উঠলে দেশী গরুর দাম বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।



এদিকে রংপুরের বেতগাড়িহাট, লালবাগহাট, নিসবেতগঞ্জহাট, পাওটানাহাট, দেউতিহাট, চৌধুরানীহাট, বালারহাট, জায়গীরহাট, শঠিবাড়িহাট, খালাশপীরহাট, বুড়িরহাট, চতারহাট, খানসামাহাট, টেপামধুপুরহাট, অনন্দানগরহাটসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় হাটগুলোতে গরু-ছাগলের কেনাবেচা শুরু হলেও এখনো জমে উঠেনি ঈদ আমেজ। হাটে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই বললেই চলে।


শুক্রবার রংপুর মহানগরীর নিসবেতগঞ্জহাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাটে আসা ক্রেতারা ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশী গরু ও ছাগলের দিকেই ছুটছেন। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় এবং দেশীয় খাদ্যে লালন-পালন হওয়ায় ওইসব গরুর প্রতি ঝুঁকছেন তারা।


পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলের গরু ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন রংপুর বিভাগের হাটগুলোতে। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বিক্রেতাদের। ক্রেতারা আসছেন, পছন্দ করছেন তবে কিনছেন কম। পাইকারী গরুর ব্যবসায়ীরাই মূলত গরু কিনছেন বেশি। বর্তমানে প্রকারভেদে হাটে দেশী গরু ৩৫ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।


বিক্রেতারা বলছেন, এখন যে দাম যাচ্ছে তাতে লাভের মুখ দেখছেন না। সব মিলিয়ে পশুর দাম কম বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।


বুড়িরহাটে গরু কিনতে আসা রংপুর নগরীর তামপাটের বাসিন্দা শাহির রশীদ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম বেশি। গত দুই হাটে ঘুরেও আমার সামর্থের মধ্যে গরু কিনতে পারিনি। অথচ এর চেয়ে কম দামে গত বছর গরু কিনেছি।


এই হাটের ইজারাদার বাবুল মিয়া জানান, হাটে দেশি ছোট ও মাঝারি গরু বেশি কেনাবেচা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত হাটে ভারতীয় গরু ওঠেনি। ঈদের আগের ২ হাটে বেশি দেশী গরু বিক্রি হতে পারে বলে আশা করেছেন তিনি।


এদিকে বাজারে গরুর দাম কম থাকার বিষয়টিকে সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন রংপুর বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শেখ আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, খামারিদের কাছ থেকে কম দামে গরু হাতিয়ে নেয়ার জন্য হাটের দালাল ও ব্যবসায়ীরাই মূলত এসব বিভ্রান্তি ছড়ায়। বস্তুত খামারিরা ঠিকই দাম পাচ্ছেন। ঈদ ঘনিয়ে আশার সাথে সাথে গরুর দামও বাড়বে।


তিনি বলেন, ক্ষতিকারক কোনো ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে যাতে কোনো খামারি গরু মোটাতাজা করতে না পারে সে জন্য মাঠ কর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন।


বিবার্তা/সোহেল/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com