কুড়িগ্রামের নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়ায় পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। মুহূর্তের মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে চলে যাচ্ছে ফসলি জমি, ভিটেমাটি। গেল বছর ভাঙন ঠেকাতে প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বরাদ্দ ছিল। পুরো কাজ করার কথা থাকলেও পরে আংশিক কাজ করে চলে যায় বলে অভিযোগ নদীভাঙ্গন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথায় ভরসা পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তরা।
গেল ৯দিনে উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাগুয়ারচর বলদমারা নৌকাঘাট, পশ্চিম পাখিউড়া, বাইসপাড়াসহ প্রায় দুই কিলোমিটারের বেশি এলাকা জুড়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয়রা।
গত কয়েকদিনে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়েছে দু’শতাধিক ঘরবাড়ি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় প্রতি মুহূর্তে মাথা গোঁজার ঠাই হারানোর আতঙ্ক নিয়ে বাস করছেন উপজেলার নদী ভাঙ্গনের কবলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা। এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ, গাছ, ডাল পুতে ভাঙন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে।
ভাঙন কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কোনো ধরনের আশ্বাস পায়নি ভাঙ্গন কবলিত ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ না করলে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে শঙ্কা স্থানীয় এলাকার জনপ্রতিনিধিদের।
ক্ষতিগ্রস্ত রুপচাঁন বলেন, থাকার ঘরটুকু ছাড়া আর কোনো জায়গা নাই, নদীর ভাঙনে সেটাও শেষ হবার লাগছে। কেমন করি বাঁচি থাকবো জানি না।
অন্যদিকে, একই গ্রামের ব্রহ্মপুত্র তীরের বাগুয়ার চর গ্রামের ইছার আলী ও রমেছার আঙিনার সীমানা প্রাচীরের কাছে নদী এসে তার ভাঙনের দাপট দেখাচ্ছে। সংগ্রামী এই দম্পতি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার তাগিদে যুগলবন্দী হয়েই নেমে পড়েছেন ভাঙন প্রতিরোধে। বাজার থেকে কিনে আনা ফাঁকা সিমেন্ট ব্যাগে বালু ভরে সেই ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধের শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র গতিপথ না বদলালে তাদেরও রক্ষা নেই।
আলমেছ আলী বলেন, শেষ চেষ্টা করি দেখি, যদি নদীর দয়া হয়!
এদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের মো. শফিকুল ইসলাম, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুড়িগ্রাম রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম শরিফুল ইসলাম ও উপ-প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম চঞ্চল কুমার শর্মা ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
বিবার্তা/সৌরভ/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]