নাটোরে ছোটবোনের স্বামী কর্তৃক দেড় বছর ধরে ধর্ষণের শিকার হয়ে আসছেন এক নারী।জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার ভান্ডারদহ গ্রামের ওই নারী থানায় এমন অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে ওই গৃহবধূ দাবি করেন, অভিযুক্ত শফি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন উপায়ে কু-প্রস্তাব দিতো। প্রথমদিকে বাধা দিলে শফি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং বিভিন্ন উপায়ে হুমকি দিতে থাকে। তার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের ক্ষতি করারও হুমকি দেয়া হয়। এতকিছুর পরও ছোট বোনজামাই হওয়ায় মানসম্মানের ভয়ে কিছু বলেননি তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত দেড় বছর আগে স্বামী বাড়ি না থাকার সুযোগে অভিযুক্ত শফি বেড়া কেটে তার ঘরে অস্ত্রসহ প্রবেশ করে এবং ছেলে ও তার গলায় ছুরি ধরে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করায়।
ওই গৃহবধূ বলেন, সন্তানসহ মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে দিনের পর দিন ব্যবহার করেছে শফি। আমি সম্মানের ভয়ে সব সহ্য করে গেছি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে আমার সাথে। এখন সকলেই আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে অভিযোগকারী ঐ নারীর বাবা ও মা থানায় জানায়, আমাদের বড় মেয়ের চরিত্রে দোষ আছে। এর আগেও দুই জায়গায় তাকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে সংসার করেনি। আমাদের মান সম্মান শেষ করে দিয়েছে। সর্বশেষ উপজেলার রাজাপুর কাচারীপাড়া এলাকায় তাকে আমরা বিয়ে দেই। কিন্তু তার চরিত্রগত সমস্যার কারণে ৮বছরের এক ছেলেসহ আমার মেয়েকে রেখে জামাই দুই বছর আগে চলে যায়। এখন আমাদের বড় মেয়ে তার ছোট বোনের সংসার ভাঙ্গার জন্য ছোট জামাই শফির (৩৮) নামে থানায় অভিযোগ করছে। আমরা জানি এ ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার মেয়ের মিথ্যা অভিযোগের কারণে তাকে আপনারা জেলে দেন, নাতিকে আমরা মানুষ করবো।
শফির স্ত্রী অর্থাৎ অভিযোগকারীর ছোট বোন বলেন, আমার বোন টাকার জন্য মিথ্যা বলছে। আমার স্বামীর চরিত্র খারাপ হলে আমি অন্ততপক্ষে জানতাম, আমার স্বামীকে টাকার জন্য ফাঁসানো হয়েছে। আমার স্বামী নিরপরাধ।
শফির বাবা মুন্নেসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ও আমার দুই ছেলে অন্যের বাড়িতে ও মাঠে কাজ করে সংসার চালাই। কিন্তু আমার ছেলে শফির উপর ধর্ষণের অভিযোগ এনে একই গ্রামের ২০-৩০ জন ছেলে সন্ত্রাসীর মতো এসে যা তা বলে গালাগাল করে হুমকি দিয়ে গেছে। তারা শালিস ডাকছে সেখানে আমিসহ আমার দুই ছেলেকে যেতে হবে এবং তিন লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে বলে জানিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই তাছাড়া আমার ছেলে নিরপরাধ। আমরা এতো টাকা কিভাবে দেবো? আর কেনই বা দেবো? ঐসব ছেলেদের কথা মতো টাকা না দেয়ার কারণে তাই আমার ছেলের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি দীলিপ কুমার দাস বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরপরই এসআই আহসান হাবীবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিবার্তা/সাকলাইন/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]