'মোর শরিল আর চলে না বাহে। ট্যাকা-পসার অভাবে অসুক হলেও অসুধ কিনে খাতে পাম না। বেটাগুলার সংসার চলে না। মোর একনা ভাতা কাট করি দেও বাহে। তোমার বেটা-বেটির জন্নে আল্লার কাছে দোয়া করিম।'
এভাবেই বয়সের ভারে নুয়েপড়া হালিমা বেওয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকুতি জানান একটা বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য।
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ৪নং জামালপুর ইউনিয়নের পাতিল্যাকুড়া চকদারিয়া গ্রামের মৃত লাল মিয়ার স্ত্রী এ হতদরিদ্র, বিধবা হালিমা বেওয়ার ভাগ্যে আজও জোটেনি বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা কার্ড। ফলে ছেলেদের সংসারে নানা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই খেয়ে-না খেয়ে বেঁচে আছেন তিনি। শেষ বয়সে একটি ভাতা কার্ডের প্রত্যাশা তার।
বৃদ্ধা হালিমা বেওয়ার বয়স ৮৪ বছর ছুঁইছুঁই করছে। এক সময় লাঠিতে ভর দিয়ে ভিক্ষা করে দিনাতিপাত করতেন। এখন চোখেও দেখেন কম। এমনকি লাঠিতে ভর দিয়েও চলতে পারেন না। ছেলে ও নাতিদের সহযোগিতায় বিভিন্ন কাজ সারেন। দিন-রাত বিছানায় শয্যাশায়ী থাকেন।
সম্প্রতি হালিাম বেওয়ার সারা শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে। ওষুধ কেনার সামর্থ্যও নেই। সেই সাথে অর্থ সংকটে দু’বেলা দু’মুঠো অন্নও জোটে না তার।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হালিমা বেওয়ার জন্ম তারিখ ১৯৩৫ সালের ৪ এপ্রিল। প্রায় ৭ বছর আগেই তিনি স্বামী লাল মিয়াকে হারিয়ে বিধবা হয়েছেন। সেই থেকে ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছেন। যদিও মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলেরা দিনমজুরি করে যা রোজগার করে তা দিয়েই তাদের সংসার চলে না। তবে মৃত্যুর আগেই একটি ভাতা কার্ডের আকুতি জানান হালিমা বেওয়া।
বৃদ্ধা হালিমা বেওয়ার ছেলে ও ভ্যান চালক হাফিজার রহমানের অভিযোগ, বিধবা ও বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট একাধিকবার ঘুরে কোনো কাজ হয়নি।
সাদুল্যাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, বৃদ্ধা হালিমা বেওয়ার বিষয়টি গত ৬ মাস আগে সমাজ সেবা অফিসে জানানো হয়েছে। এখন কী অবস্থায় আছে তা জানি না।
বিবার্তা/তোফায়েল/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]