শিরোনাম
তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, ভাঙন; যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৮, ১৬:৩২
তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, ভাঙন; যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
রংপুর ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীকে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নদীটির গতিপথ ব্যাপকভাবে বদলে গেছে। সেই সাথে ক্রমাগত বেড়েই চলছে ভাঙন।


বেশ কিছু জায়গায় বিপদ সীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকায় দুইটি মসজিদসহ অন্তত ৩০ পরিবারের বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভেঙে গেছে ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তাঘাট।


নদীর এই সর্বগ্রাসী অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এরই মধ্যে স্থানীয়রা গাছ ও বাঁশ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তেমন কোনো লাভ হচ্ছে না।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গঙ্গাচড়ার লক্ষীটারি পুরনো শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন হুমকির মুখে। আর মাত্র ২০ ফুট ভাঙলেই তিস্তায় তলিয়ে যাবে স্কুলটি। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নির্মিত দ্বিতল ভবনের এই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এখন স্কুলে যাওয়া আসা করছে।


এরই মধ্যে শংকরদহ বিদ্যালয়ের পাশের মসজিদটি তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে। সাউদপাড়া মাদরাসায় যাওয়ার রাস্তা, আনন্দোলোক বিদ্যালয় সংযোগ সড়ক, শংকরদহ চরের সংযোগ সড়কে জোড়া ব্রিজ, মহিপুর-কাকিনা সড়কের শংকরদহ স্কুলের পাশে ব্রিজের সংযোগ সড়ক পানির স্রোতে ভেসে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখন ভয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এসব এলাকার লোকজন দিন-রাত আতঙ্কে কাটাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় স্থানীয়রা বাঁশ, গাছ ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।


স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, গঙ্গচড়ার লক্ষীটারী, নোহালী, আলমবিতিতর, গজঘণ্টা ও কোলকোন্দ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চরের আনোয়ার, গুটলু, ফুলু, দয়াল, বল্টু ও লক্ষীটারী ইউনিয়নের পূর্ব ইচলীর সেকেন্দার, সইয়ুদ, মাজেদা, আমিন, ওলিয়ার, আনোয়ার, ছুপিয়া, জয়নাল, বাবু, সন্তোষ, হাককু, মতিয়ার, ছবুর, নায়েব, ওয়ারেছ, দুলু, ইলিয়াছ, বারেক, রজব, মতিনসহ ৩০ পরিবারের বাড়ি-ঘর, গাছপালা, জমি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া বিনবিনায় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল আনন্দলোক বিদ্যালয় ও সাউদপাড়া ইসলামিয়া আলীম মাদরাসাটি এখনো ভাঙন শঙ্কায় রয়েছে।সাউদপাড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এখন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে কোনো রকমে চলাচল করছে।



মাদরাসার অধ্যক্ষ রোকনউজ্জামান জানান, পানির তোড়ে সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে মাদরাসায় আসা-যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসীর উদ্যোগে গত রবিবার ভাঙা সড়কে বাঁশ দিয়ে কোনো রকমে চলাচল করতে হচ্ছে। অব্যাহত তিস্তার ভাঙনে বৃহৎ এই মাদরাসাটিও হুমকির মুখে পড়েছে।


নোহালী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, চর নোহালী আশ্রয়ণ কেন্দ্র হুমকির মুখে। জরুরি ভিত্তিতে কাজ না করলে আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।


অন্যদিকে লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান অব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, স্কুলের ভাঙন রোধে দ্রতই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।


এদিকে রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আলী জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী জুনের শেষ সপ্তাহে এ অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।


বিবার্তা/রশীদ/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com