শিরোনাম
বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় আম নিয়ে বিপাকে চাষিরা
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০১৮, ১৩:৩৪
বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় আম নিয়ে বিপাকে চাষিরা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এ বছর আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ২০০০ সালে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ উপজেলার ২০ জন চাষিকে ১০০টি করে আমরুপালি চারা দিয়ে প্রদর্শনী প্লট শুরু করলেও বর্তমানে এ উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৫০০ আমচাষী ৩০০ হেক্টর জায়গা জুরে আম বাগান বাগান গড়ে তুলেছেন।


এছাড়া এ উপজেলার প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায়ও ছোট ছোট আকারের অসংখ্য আম বাগান রয়েছে। এ সব আম বাগান থেকে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার ম্যাট্রিক টন। প্রকার ভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে এ আম বিক্রি করা হচ্ছে। এ বছর উৎপাদিত আমের বাজার মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় প্রায় ৬৮ কোটি টাকা।


আমের সংরক্ষণাগার ও বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় সখীপুরে উৎপাদিত প্রায় ৬৮ কোটি টাকার আম নিয়ে বাগানিরা পড়েছেন বিপাকে। বিপণন ও সংরক্ষণাগার থাকলে আম চাষিরা আরো অধিক লাভবান হতেন। আম চাষিদের কল্যাণে দ্রুত একটি আম গবেষণা সেন্টার গড়ে তোলার জন্যও সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানান বাগান মালিকরা।


স্থানীয় কৃষি বিভাগের জোর তৎপরতা এবং স্থানীয় আম চাষিদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের কারণেই বিষমুক্ত আম পাকানোর চরম সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এ উপজেলার আম চাষিরা। অন্য ফসলের চেয়ে আম বাগান অধিক লাভজনক হওয়ায় ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বীও হয়েছে এখানকার বহু অ-সচ্ছল পরিবার।


কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যে হারে সখীপুরে আমচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে অল্পদিনেই সখীপুর আম চাষে চাঁপাইনবাবগঞ্জকেও ছাড়িয়ে যাবে। এখানে দুর্লভ বারি-৪ ছাড়াও মল্লিকা, পালমার, পাল্লুতান, মহানন্দা, গোপালভোগ, গোপাল খাস, প্রাপ্তি, দশোরী, বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি, ফজলি, ল্যাংড়া, লক্ষণভোগসহ প্রায় ৩৬ জাতের আম চাষ করা হচ্ছে।


তবে সখীপুরের মাটি আমরুপালি’র (বারি-৪) জন্য সব চেয়ে বেশি উপযোগী বলে আম চাষিরা জানান। কীটনাশক ও ফরমালিন মুক্ত এ আম উপজেলার চাহিদা পূরণ করে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলা, বিভাগীয় শহর ঢাকা-ময়মনসিংহসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেপারীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার মৌসুমের শুরুতেই ঢাকার কারওয়ান বাজার, বাদামতলী, সদরঘাটসহ দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে বেপারীরা এখানকার আম বাগান আগাম কিনে নিয়েছেন। মাটির গুণাগুণ অনুসারে সখীপুরে আম উৎপান্নের জন্য খুবই উপযোগী বলে কৃষিবিদরা জানান।



অপরদিকে সখীপুরে উৎপাদিত আমের সংরক্ষণাগার ও বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা লাভের বড় অংশ লোফে নিচ্ছেন। বিপণনের স্বার্থে কানসাটের মতো আমের বাজার স্থাপন করা এবং আম সংরক্ষণাগার স্থাপন করা দরকার বলে এখানকার আম চাষিদের একমাত্র দাবি।


উপজেলার অভিজ্ঞ এবং সফল আম চাষি জুলফিকার হায়দার কামাল লেবু বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সখীপুরে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আম সংরক্ষণাগার না থাকায় আম পাকা শুরু হলে দ্রুত আমাদের আম বিক্রি করে দিতে হয়। বলেই বাগান মালিকদের বাজারের চেয়ে কম দামে আম বিক্রি করতে হয়। এতে করে বাগান মালিকদের চেয়ে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা লাভের বড় অংশ লুফে নেন। তিনি দ্রুত আমের সংরক্ষণাগার ও বিপণন ব্যবস্থা স্থাপনের জোর দাবি জানান।


উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সখীপুরের মাটি আমরুপালি’র (বারি-৪) জন্য সব চেয়ে বেশি উপযোগী। স্থানীয় কৃষি বিভাগের জোর তৎপরতা এবং স্থানীয় আম চাষিদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের কারণেই বিষমুক্ত আম পাকানোয় চরম সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এ উপজেলার আম চাষিরা। চাষিদের কল্যাণে দ্রুত একটি আম সংরক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com