শিরোনাম
ঝালকাঠি-নলছিটি সড়কের বেহাল দশা
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০১৮, ১৮:০৯
ঝালকাঠি-নলছিটি সড়কের বেহাল দশা
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

অসংখ্য খানা-খন্দে ভরা ঝালকাঠি-নলছিটি সড়ক। এত দুর্বস্থার কারণে জেলা সদরের সঙ্গে ১৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। তাছাড়া স্থানীয় সুগন্ধা নদীতে ফেরি চলাচলেও খুব অনিয়ম। ফলে চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে দুই এলাকার যোগাযোগ।


সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভাঙা সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল, টেম্পু, অটোরিকশা, টমটমসহ ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে জেলা ও বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করতে হয় নলছিটি উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষকে।


স্থানীয়রা জানান, জেলা সদর থেকে নলছিটি পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ২০০৪ সালে বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল। সুগন্ধা নদীতে চলাচল করা একমাত্র ফেরিটিও বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে দুর্ভোগ শুরু হয় নলছিটিবাসীর। এখন উপজেলার দেড়লাখ মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনে চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া ফেরি চলাচল অনিয়মিত হওয়ায় নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার অথবা নৌকা।


জেলা শহর ঝালকাঠির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য ১৯৯৮ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঝালকাঠি-নলছিটি সড়কটি তৈরি এবং সুগন্ধা নদীর নলছিটি-ষাইটপাকিয়া পয়েন্টে একটি ফেরি চালু করে। তখন থেকেই শুরু হয় যাত্রীবাহী বাস চলাচল। স্থানীয় বাসিন্দারাও বিনামূল্যে ফেরি পার হয়ে যাতায়াত করতেন। দিনরাত জমজমাট ছিল ফেরিঘাট এলাকা।


প্রতিদিন নলছিটি থেকে হাজারো মানুষ ফেরি পারাপার করতেন। নলছিটি-ষাইটপাকিয়া সড়ক ও পীর মোয়াজ্জেম হোসেন-মোল্লারহাট সড়কটি খানাখন্দে ভরে যাওয়ায় বাসচলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। যাত্রী কমে যাওয়ায় ২০০৪ বন্ধ হয়ে যায় ঝালকাঠি-নলছিটি রুটে সরাসরি বাস চলাচল। সেই থেকে সার্বক্ষণিক ফেরি চলাচলও থমকে যায়। মাঝেমধ্যে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের গাড়ি আসলে ফেরি ছাড়া হয়। আর ব্যক্তিগতভাবে ফেরিতে গাড়ি পার করতে হলে দিতে হয় তেলখরচ বাবদ ৩০০ টাকা।


নলছিটির বাসিন্দা কে এম সবুজ বলেন, যখন নিয়মিত ফেরি চলাচল করত তখন দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা নলছিটি থেকে ঝালকাঠি যেতে পারতাম। এখন ট্রলারে ১৮ জন লোকের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ১৮জন লোক না হলে ট্রলার ছাড়ে না। কখনো বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে গেলে অধিক ভাড়া দিয়ে ট্রলারে পার হতে হয়। সরকারি ফেরি ও সড়ক থাকা সত্ত্বেও অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের উপজেলাবাসীর দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।


কাঠিপাড়া গ্রামের শাহীন আহম্মেদ বলেন, নদী পার হলেই নলছিটি শহর, তাই আমাদের আশপাশের গ্রামের মানুষ নলছিটিমুখী। বাজারও করতে হয় নলছিটি গিয়ে। রাস্তায় বাস না থাকায় এবং ফেরি নিয়মিত চলাচল না করায় নদীর উভয় পাড়ের লোকজন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।


ফেরিঘাটের সাবেক ইজারাদার মাহাবুব কামাল বাবুল বলেন, আগে ফেরিতে ভালো লাভ ছিল। এখন লাভ তো দূরের কথা লোকসান গুনতে হয়। আমি অনেক আগেই ইজারা ছেড়ে দিয়েছি। এখন সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিজেদের লোক দিয়ে ফেরি সার্ভিস কোনো রকম চালু রেখেছে। সরকারও ফেরিটি দিয়ে লোকসানে আছে।


সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ঝালকাঠি-নলছিটি সড়কটি মেরামতের জন্য ইতোমধ্যেই ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও নলছিটিবাসীর চলাচলের কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি সুগন্ধা নদীর ফেরি চলাচলে প্রতিদিন চারটি ট্রিপ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এতে উপজেলাবাসী বিনামূল্যে নদী পারাপার করতে পারবেন।’


বিবার্তা/আমিনুল/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com