শিরোনাম
সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত লক্ষ্মীপুরের কারিগররা
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০১৮, ১৪:৫৯
সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত লক্ষ্মীপুরের কারিগররা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। বাজারের চাহিদা পূরণে শেষ মুহূর্তেও সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে লক্ষ্মীপুরের সেমাই তৈরির কারিগর ও শ্রমিকরা। বছরের দুই ঈদেই সেমাই তৈরিতে তাদের ব্যস্ততা বাড়ে। কাঁচামালের দাম ও শ্রমিকদের মজুরি বেশি হলেও গুনগত মান বজায় রেখেই সেমাই বাজারজাত করছেন দাবী মালিক পক্ষের।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরীর সুলতানিয়া বিস্কুট বেকারি, টপ চয়েস বেকারিসহ কয়েকটিতেই উৎপাদন করা হয় জুরী ও লাচ্ছা সেমাই। এসব কারখানায় কাজ করছে নারী-পুরুষসহ প্রায় শতাধিক শ্রমিক। এসব কারিগর ও শ্রমিকদের আগেই অগ্রিম টাকা দিতে হয়। এখানকার খোলা ও প্যাকেটজাতকৃত সেমাই জেলার রায়পুর, রাখালিয়া, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগরসহ বিভিন্ন স্থানের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে পরিবেশকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এখানকার উৎপাদিত প্রতি কেজি সেমাই উৎপাদন করতে ৬০-৬৫ টাকা খরচ হলেও বিক্রি করছেন ৭০-৭৫ টাকা। অন্য দিকে তা খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৯০-১০০ টাকা।


আরো জানা যায়, প্রথমে ময়দা আর পানির মিশ্রণে তৈরি করা হয় খামির। পরে খামির গুলোকে ছোট ছোট চাকায় পরিণত করা হয়। সেই খামিরের চাকাকে ডালডা ও তেলের সাথে মিশানো হয়। এরপর খামিরগুলোকে হাতের সাহায্যে ২-৩ ঘন্টা টেনে পেঁচিয়ে সেমাইয়ে পরিণত করা হয়। এরপর তেলে ভেজে বাজারজাত করণ করা হয়।
সেমাই তৈরির শ্রমিক হাসান বলেন, ‘বছরের অন্যান্য সময় বেকারিতে কেক, বিস্কুটসহ অন্য খাদ্য উৎপাদন করে থাকি। রমজান ও ঈদের সময় সেমাইর চাহিদা বেশি থাকে। তাই সেমাই তৈরির কাজে এখন ব্যস্ত রয়েছেন।’


লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্প নগরী এলাকার সুলতানিয়া সেমাই কারখানার ম্যানেজার মীর হোসেন জানান, কোনরকম রং ও কেমিক্যাল ছাড়াই সুন্দর পরিবেশে সেমাই তৈরি করে বাজারজাত করছেন। এখানকার সেমাইয়ের গুনগত মান ভালো হওয়ায় চাহিদা অনেক বেশি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সরবরাহ না থাকায় চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করা যাচ্ছে না।


ভোলা জেলার লালমোহন এলাকার আবুল কালামের। তিনি ২৫ বছর ধরে এ শিল্পের সাথে জড়িত। বর্তমানে কাজ করছেন সুলতানিয়া বেকারির সেমাই কারখানায়। আলাপকালে তিনি জানান, এ জেলায় সেমাই খুব চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বিসিক এলাকায় নানা সমস্যার কারণে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তার পরও (প্রতি বস্তায় ৭৫ কেজি করে) দৈনিক ১৫/১৮ বস্তা খোলা ও প্যাকেট জাত সেমাই বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।


বিসিক শিল্পনগরীরর মালিক সমিতির সভাপতি ও সুলতানিয়া সেমাইয়ের মালিক আবুল কাশেম বলেন, জেলায় সেমাইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্বেও পুঁজি ও শ্রমিকের অভাবে মাল সরবরাহ দিতে পারছেন না। এছাড়াও সেমাই তৈরির কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট, মজুরি ও ঘর ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে ব্যবসা টিকিয়েই রাখাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপরেও গুনগত মান বজায় রেখেই সেমাই বাজারজাত করছি। তাছাড়া বিসিক শিল্প এলাকায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট ও ড্রেনের অব্যবস্থাপনার কারণে উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিসিক শিল্প নগরীর প্রমোশন অফিসার ফাতেমা আক্তার জানান, এখানকার উৎপাদিত সেমাই খুবই সুস্বাদু। জেলার বিভিন্ন স্থানে অধিক পরিমাণে সেমাই সরবরাহ করে থাকে কারখানাগুলো। বিসিক এলাকায় নানা সংকটের কারণে তাদের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন দুই কোটি টাকা, কিন্তু দেয়া হয়েছে মাত্র ১২ লাখ টাকা। যা দিয়ে সমস্যা সমাধান হবে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।


বিবার্তা/ফরহাদ/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com