শিরোনাম
ঝালকাঠির পোশাক তৈরির কারিগরদের রাত কাটছে নির্ঘুম
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০১৮, ১১:২৯
ঝালকাঠির পোশাক তৈরির কারিগরদের রাত কাটছে নির্ঘুম
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নিজস্ব ডিজাইন ও পছন্দের কাপড়ে তৈরি পোশাক পরতে পছন্দ করেন অনেকে। তাই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ক্রেতাদের ভিড়বাড়ছে দর্জির দোকানে। ঈদের আগেই ক্রেতাদের হাতে পোশাক তুলে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। কেউ ব্যস্তক্রেতাদের কাছ থেকে কাপড় বুঝে নিয়ে পোশাকের মাপ ও ডিজাইন জানতে। পাশেই কেউ আবার ব্যস্ত ডিজাইন অনুযায়ী কাপড়কাটায়।


রমজান মাসের শুরু হতেই শহরের দর্জির দোকানগুলোতে ফুসরত নেই। এসব দোকানে ব্যস্ততা দেখে বোঝা যায় বাজারে তৈরি পোশাকের দোকান বাড়লেও কমেনি দর্জির কদর। ক্রেতারাও বলছেন পছন্দমত কাপড় কিনে মাপসই পোশাক বানাতেই এসব কারিগরের দ্বারস্থ হওয়া।


ক্রেতারা জানান, পোশাকের ফিটিংয়ের জন্য এখানে আসা হয়। রেডিমেড পোশাক কিনলেও ফিটিংয়ের জন্য দর্জির কাছে আসা লাগে। এছাড়া যে কোনো ডিজাইন দিলে সেই অনুযায়ী দিতে পারেন তারা।


দর্জিরা বলছেন, শবেবরাতের পর থেকেই শুরু হয়েছে ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের আনোগোনা। দিন গড়াতেই তাদের চাপ আরোবাড়ে। ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে ৪শ’ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে থ্রি-পিসের মজুরি।


দর্জিরা জানান, আগামী ২২ রোজা পর্যন্ত আমরা অর্ডার নেবো। যেহেতু চাঁদ রাতের আগে পোশাক দিতে হয়। এই জন্য যা দিতেপারবো সেই অনুযায়ী অর্ডার নিচ্ছি।


শহরের কাপুড়িয়া পট্টি রোডের এক টেইলাসের মালিক আল-আমিন জানান, ক্রেতারা আগের মতো ক্যাটালগ চাচ্ছে না। বরং তারা নিজেরাই ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে আমাদেরকে দেখায়, ওই হিসেবে আমরা তৈরি করে দেই।


শহরের আরো কয়েকটি টেইলার্স ঘুরে এর মালিক ও কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগের বছরগুলোতে ১৫ রোজারমধ্যে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিতে হতো। কিন্তু এ বছর মাসের মধ্য সময়ে রোজা শুরু হওয়ায় যারা চাকুরিজীবী তারা অনেকেইএখন বেতন পেয়েছেন। তাই অনেকেই ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের পছন্দের পোষাকের কাপড় কিনে দিচ্ছেন।



কারিগররা জানান, শনিবার থেকেই সারা রাত জেগে পোশাক তৈরি করতে হচ্ছে। অর্ডার বুঝে দর্জির দোকানগুলোতে কারিগর রেখে কাজ করানো হয়।


এদিকে ছেলেদের পোশাক তৈরির দোকানগুলোতে মেয়েদের মতো ততোটা ভিড় না থাকলেও শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি তৈরির সংখ্যাঅন্যান্য সময়ের চেয়ে বেড়েছে। গরমের কারণে এবার ব্লেজার, স্যুটের চাহিদা কম।


শহরের কুমারপট্টির ফ্যাশন টেইলাসের মালিক হারুন অর রশিদ জানান, অর্ডার যা পাচ্ছি তা গত বছরের তুলনায় মন্দ নয়। এ বছর ভারতীয় রেমন্ড, গিজা ও অরবিন্দু কাপড়ের শার্ট এবং প্যান্টের কাপড়ের চাহিদা বেশি। ডিজাইন অনুযায়ী একটি শার্ট ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা এবং প্যান্টের মজুরি ৫৩০ টাকা রাখা হয়।


কয়েকটি টেইলাসের কর্মচারী জানান, আগের বছরের তুলনায় এ বছরে অনেক কাস্টমার। তবে এই বছর শার্ট ও প্যান্টের চাহিদা বেশি।


চাঁদরাত পর্যন্ত দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করবেন এসব সেলাই শ্রমিকরা। এছাড়া শহরের পাড়া মহল্লার দর্জি দোকানগুলোতেও ভিড়বেড়েছে। অনেক মহিলা বাসায় বসেই মেয়েদের থ্রি-পিছ বানানোর কাজ করে থাকেন। তাদের কাছে শহরের বড় বড় দর্জির দোকানের চেয়ে অনেকটা কম মূল্যে পোশাক তৈরি করা যায় বলে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে তাদের কাছে ভিড় করেন।


শহরের দুর্গা প্রাসাদ রোডে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত টেইলার্সে গিয়ে দেখা গেছে মেয়েদের ভিড়। নাম প্রকাশে না করার শর্তে টেইলার্সের মহিলা মালিক জানান, প্রথম রোজার পর থেকেই তার দোকানে ঈদের পোশাক তৈরির অর্ডার নেয়া শুরু হয়েছে। যা চলবে ২২ রোজা পর্যন্ত।


কারিগররা জানান, অনেক নিকটাত্মীয় আসে ঈদের কয়েক দিন পূর্বে। তাদের জন্য রাখা হয় আলাদা অর্ডার। আত্মীয়তার সুবাদে তাদের কষ্ট হলেও তাদের পোশাক তৈরি করে দিতে হচ্ছে।


বিবার্তা/আমিনুল/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com