শিরোনাম
মিতু হত্যা: শিগগিরই চার্জশিট দাখিল
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০১৮, ১১:৫৭
মিতু হত্যা: শিগগিরই চার্জশিট দাখিল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বহুল আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার দুই বছর পূর্ণ হলেও চার্জশ্টি দিতে পারেনি পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ মামলার কোনো কূল কিনারাও করতে পারেনি।


২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মিতুকে।


মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মোঃ কামরুজ্জামান বলেছেন, অভিযোগপত্র তৈরির কাজ চলছে। কিছু কাজ বাকি আছে। তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।


অভিযোগপত্রে স্বামী বাবুলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কিছু থাকছে কি না, জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কিছুই বলতে চাননি।


জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের শিগগিরই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। তবে তাতে বাবুলকে আসামি করা হচ্ছে না। তিনি মামলার বাদীই থাকছেন।


পদোন্নতি পেয়ে ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে যোগ দেয়ার আগে বাবুল চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ছাড়ার কয়েক দিনের মধ্যে খুন হন মিতু।


হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন বাবুল।



তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত অভিযোগপত্রে বাবুলকে মামলার বাদী ও গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে রাখা হচ্ছে। আর খুনের মূলহোতা মুছাকে প্রধান আসামি করা হচ্ছে। এর বাইরে অন্তত ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হবে।


মামলার সন্দেহভাজন আসামির মধ্যে ওয়াসিম, আনওয়ার, শাহজাহান ও এহতেশামুল হক বর্তমানে কারাগারে। এছাড়াও মূল আসামি মুছা ও কালু পলাতক। আর জামিনে রয়েছে আসামি ছায়েদুল আলম ছাক্কু, আবু নসর গুন্নু ও রবিন। কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় আসামি নবী ও রাশেদ।


ঘটনাস্থলের সিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে মুছা, কালু, ওয়াসিম, আনোয়ার ও নবীকে। তারা কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নিয়েছে। ছাক্কু হত্যাকারীদের মোটরসাইকেল দেয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রিভলভার সরবরাহ করে এহতেশামল।


মিতু হত্যার ২০ দিন পর ২০১৬ সালের ২৬ জুন পুলিশের পক্ষ থেকে আনোয়ার ও মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দুজনকে গ্রেফতারের কথা জানানো হয়।


ওয়াসিম ও আনোয়ার আদালতে দেয়া জবানবন্দি উদ্ধৃত করে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছার ‘পরিকল্পনাতেই’ এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।


ওয়াসিমের দাবি অনুযায়ী, সে ছাড়াও নবী, কালু, মুছা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি বাবুলের ‘সোর্স’ হিসেবে পরিচিত নগরীর বাকলিয়া এলাকার এহেতেশামুল হক ভোলা সরবরাহ করেছিলেন।


এরপর পুলিশ বাকলিয়া এলাকা থেকে ভোলা ও তার সহযোগী মনির নামে এক ব্যক্তিকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তলসহ গ্রেফতারের কথা জানিয়ে বলে, এই পিস্তলটিই মিতু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছিল।


পুলিশের পক্ষ থেকে ভোলা ও মনিরকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি আলাদা মামলা হয়। মিতু হত্যা মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয় ভোলাকে। ভোলা ছাড়াও পুলিশ মিতু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল সরবরাহকারী মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাকু, শাহজাহানকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।


অন্যদিকে মিতু হত্যার ঘটনায় একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে মামলার বাদী বাবুলকে। এর মধ্যে ২৫ জুন নাটকীয়ভাবে বাবুলকে ঢাকায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই ঘটনায় সর্বশেষ গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বাবুল সিএমপি কার্যালয়ে এসে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।


এদিকে মিতুর স্বজনদের দাবি, মূল আসামিকে বাঁচাতে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে এ মামলার তদন্ত। তারা এ হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মিতুর স্বামী বাবুলকেই ইঙ্গিত করছেন। যদিও তদন্তকারী সংস্থা নগর গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছে না।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com