শিরোনাম
আজও চালু হয়নি ঝালকাঠির হাঁস প্রতিপালন ইউনিটটি
প্রকাশ : ২৯ মে ২০১৮, ০৫:০৪
আজও চালু হয়নি ঝালকাঠির হাঁস প্রতিপালন ইউনিটটি
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশাল। প্রবাদ বাক্যটির সাথে এ অঞ্চলে হাঁস পালনের একটি পরিবেশ আছে। কারণ হাঁসের অবাধ বিচরণের জন্য খাল বা নদীই পছন্দ। যা বরিশাল অঞ্চলের সব জেলাতেই আছে।


প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় হ্যাচারিসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন প্রকল্পের বরিশাল বিভাগের একমাত্র হাঁস প্রতিপালন ইউনিট এটি। সংস্কারের পর দীর্ঘ দিনেও চালু করা হয়নি। ঝালকাঠি গাবখান ব্রিজের পাশে ইউনিটটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে সংস্কার কাজ শেষ হলেও অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। এটি চালু হলে শুধু ঝালকাঠি নয় এ বিভাগে উন্নত মানের হাঁসের বাচ্চা সরবরাহ করা সম্ভব হতো। ফলে হাঁস পালনে আগ্রহী খামারিরা অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হতে পারত।


২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ইউনিটটির সংস্কার কাজ শেষ হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত এটি চালুর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ১ দিনের হাসের বাচ্চা এখানে এনে ২ মাস প্রতিপালনের পর তা বিক্রি করা হতো। ঝালকাঠিসহ বরিশাল বিভাগে হাসের বাচ্চার প্রচুর চাহিদা থাকায় এখানে প্রতিপালিত বাচ্চার তুলনায় চাহিদা ছিল ২/৩ গুন বেশি। কিন্তু উৎপাদন অপ্রতুল হওয়ায় অপর জেলা থেকে আসা ক্রেতাদের আগেই ঝালকাঠি ও আশেপাশের খামারিরা তা ক্রয় করে নিয়ে যেত।


ঝালকাঠি গাবখান এলাকার ২ একর জমির উপর ২০০৬-০৭ অর্থ বছরের ২৩ এপ্রিল এটি চালু করা হয়। প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইউনিটটিতে মাত্র ২ বছর এর কার্যক্রম চালু ছিল। ২০০৯ সনের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ইউনিটের কার্যক্রম মুখ থুবরে পরে। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত এই বিশাল ভবনসহ ইউনিট প্রাঙ্গণ অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকে। এই সুযোগে এলাকার কিছু মাদক আসক্ত ও অসাধু লোকজন ভবনের গ্রীলসহ ভিতরের মূল্যবান আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এমনকি রাতের আধারে ইউনিটের বৈদ্যুতিক পাখাসহ লাইনের তার, কাঠের দরজা, জানালা খুলে নিয়ে যায়।


এই দীর্ঘ সময় ইউনিট প্রাঙ্গণ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে অরক্ষিত অবস্থায় পরে থাকে। এ সময় ভবননের ভিতরে এলাকার কিছু লোকজন তৎকালীন জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহায়তায় অবৈধ মুরগীর খামার গড়ে তোলে। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরা হলে প্রাণিসম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। এরপরই কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়ে ইউনিটটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।


ঝালকাঠি প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি জেলায় মোট ছোট বড় হাঁসের খামার আছে ১২২টি। এতে মোট হাসের সংখ্যা ৫ লাখ ২৯ হাজার ২৬৮টি। তারপরেও শুধু ঝালকাঠি জেলাই হাঁসের বাচ্চার চাহিদা আছে প্রায় ৪০ হাজার। এছাড়া বরিশাল বিভাগের অপর ৫টি জেলায় যে পরিমাণ হাঁসের বাচ্চার চাহিদা আছে তা পূরণ করা সম্ভব হতো এ ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হলে।


এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আবদুল হান্নান জানান, এ ইউনিট সংস্কার করা হলেও এখনো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। তাই এটি কবে নাগাদ চালু করা হবে তা আমার জানা নেই। আমি এর বেশি কিছুই বলতে পারছি না।


তবে বরিশাল অঞ্চল হাঁস পালনের সবচেয়ে উপযোগী। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই এবং হাঁস ও হাঁসের ডিম বিক্রি করে খামারিরা অনেক বেশি লাভাবন হতে পারে। কিন্তু হাঁসের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় সরকার এই হাঁস প্রতিপালন ইউনিটটি নির্মাণ করেছে। সম্ভবত লোকবলের অভাবে এটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করি এটি আবার চালু হলে এ অঞ্চলের হাঁসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।


বিবার্তা/আমিনুল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com