শিরোনাম
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় চিংড়ির রেণু শিকার
প্রকাশ : ২৬ মে ২০১৮, ১৩:২৭
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় চিংড়ির রেণু শিকার
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কম পরিশ্রম ও সময়ে, বেশি রেণু পাওয়া যায়। তাই স্কুল না থাকলেই মশারির জাল দিয়ে নদীতে গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা ধরছি। বর্তমান সময়ে যেমন গলদা-বাগদার রেণু পোনা বেশি পাওয়া যায় তেমনি দামও। আর রেণু পোনা বিক্রির টাকা দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটাচ্ছি। এমনটাই বললো, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শরীফ হোসেন।


শরীফ বলে, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৭০০ রেনু পাওয়া যায়। দীর্ঘসময় নদীতে থাকলে আরো বেশি পাওয়া যায়। আর প্রতিটি রেণু ২ থেকে ৩টাকা ধরে বিক্রি করা যায়।


লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা নিধন করছে শরীফের মতো আরো অনেকে। এতে ধ্বংস হচ্ছে নদী ও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণু পোনা। এরই ধারাবাহিকতায় মেঘনা নদীতে দিন দিন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে গলদা-বাগদা সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা।


সরজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহু নারী পুরুষ ও শিশু মশারির জাল দিয়ে জেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন যায়গায় গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা ধরার কাজে ব্যস্ত। তারা জাল থেকে চিংড়ির রেণু পোনা আলাদা করে পাত্রে জিইয়ে রাখলেও অন্য প্রজাতির মাছের পোনাগুলো ডাঙায় অথবা চরে ফেলে দেয়ায় সেগুলো মারা যাচ্ছে। ফলে হুমকিতে পড়েছে সামুদ্রিক মাছের বংশবিস্তার।


আরো দেখা যায়, বাজারে প্রতিটি গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা বিক্রি হয় ২/৩ টাকা করে। এক এক জেলে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১ হাজার চিংড়ির রেণু পোনা বিক্রি করে। আবার মহাজনরাও অতি আগ্রহে অগ্রিম ঋণ দেয়ায় রেণু পোনা শিকারে উৎসাহী হয়ে উঠছে জেলেরা।


কয়েকজন রেণু পোনা শিকারি জানান, অল্প সময়ে ও কম পরিশ্রমে অনেক রেণু পাওয়া যায়। যার দাম ও বেশি। তাই তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রেণু পোনা শিকার করছে। অন্যদিকে এ সময় কর্মসংস্থানের ও সুযোগ কম থাকে।


তবে স্থানীয়রা জানায়, নদীতে চিংড়ির রেণু পোনা শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু জেলে এ চিংড়ির রেণু ধরতে গিয়ে অন্যান্য প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পোনা নিধন করছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে নদী ও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণু পোনা। ফলে মেঘনায় দিন দিন অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে গলদা-বাগদা, ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছের পোনা।


রেণু পোনা ব্যবসায়ীরা জানান, জেলেদের কাছ থেকে রেণু পোনা ক্রয় করে খুলনা, যশোর, ডুমুরিয়া সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গলদা-বাগদা চিংড়ির ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করেন।


জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বলেন, ঝটিকা অভিযান চালিয়ে গলদা-বাগদা রেণু পোনা শিকারি ও মহাজনদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হয়েছে। পুড়ানো হচ্ছে তাদের ব্যবহৃত মশারির জাল।


রেণু পোনা রক্ষায় মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও নজরধারী জোরদার করা হলে নদী ও সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন যেমন বাড়বে তেমনি গতিশীল হবে দেশের অর্থনীতি।


প্রসঙ্গত, ২০০০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে দেশের উপকূলীয় এলাকায় মাছের রেণু পোনা আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়।


বিবার্তা/ফরহাদ/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com