শিরোনাম
‘লক্ষ্মীপুরে সড়ক নির্মাণ কাজে ধীরগতি’
প্রকাশ : ২৪ মে ২০১৮, ১০:২৮
‘লক্ষ্মীপুরে সড়ক নির্মাণ কাজে ধীরগতি’
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লক্ষ্মীপুরে অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ সড়ক খানাখন্দে ভরা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে এসব সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাতায়াত নিশ্চিত করতে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।


জানা যায়, বিপুল বরাদ্দে জেলাব্যাপী বেশকিছু সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ কাজ চলছে। অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারিক না থাকায় এসব কাজ চলছে ধীরগতিতে। এতে মানুষের কষ্ট বেড়েছে কয়েকগুণ।


স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেও কোন সুফল আসেনি। সড়কগুলোর দুর্দশা ও নির্মাণ কাজে ধীরগতি এবং ঠিকাদারদের অনিয়মের বিষয়ে প্রায় প্রতি মাসেই জেলা ও উপজেলায় মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশ নেয়া জনপ্রতিনিধিরা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কাজে দৃশ্যমান অগগ্রতি দেখা যায় না।


সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগরের অধিকাংশ সড়কের অবস্থা বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে এসব সড়কের সংস্কার করা হয়নি। এতে পিচ, ইট-খোঁয়া উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। সরকারি অর্থ বরাদ্দে জেলাব্যাপী বেশকিছু সড়কে সংস্কার ও নির্মাণ কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, ধীরগতিতে চলছে এসব কাজ।


সদরের মান্দারী-দাসেরহাট, তেওয়ারীগঞ্জ-আমিন বাজার, হাজীরপাড়া-চৌপল্লী, তেওয়ারীগঞ্জ-চৌপল্লী, রায়পুর-পানপাড়া, পীর ফয়েজউল্যা-কাপিলাতলী সড়ক, হায়দারগঞ্জ-ঝাউডগী, বাংলাবাজার-পশ্চির চর আবাবিল, রামগঞ্জ-সোনাইমুড়ি, রামগতির বাংলাবাজার-খাসেরহাট, বুড়া কর্তার আশ্রম-জনতা বাজার, রামদয়াল-সুফিয়ার বাজার ও কমলনগরেরর কড়ইতলা-চৌধুরীবাজার-নাসিরনগর, তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট, চরলরেঞ্চ-ফজু মিয়ার হাট এবং তোরাবগঞ্জ-আজাদনগর বেঁড়িবাধের সড়কের অবস্থা বেশি নাজুক।



অপরদিকে রায়পুর-পানপাড়া সড়কে দেখা যায়, সড়কটির ৬ কিলোমিটার চলাচলের অনুপোযোগী। অসংখ্য খানাখন্দে ভরপুর। ছোট-বড় অসংখ্য গর্তে পানি জমে রয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক-সিএনজি অটোরিকশাসহ যানবাহন চলাচল করছে।


এদিকে রামগঞ্জ-সোনাইমুড়ি সড়কের প্রায় ২৬ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা। রামগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) কামাল উদ্দিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রাস্তা এত খারাপ ভাষায় প্রকাশ করতেও কষ্ট হয়। বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়েই প্রতিটি বাস-ট্রাক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে। একবার এ রুটে আসলে, পরেরবার যেতে মন চায় না। পুরো শরীর ব্যাথা হয়ে যায়।


সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুর রশিদ বলেন, পুরো লক্ষ্মীপুরের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। ধুলাবালির যন্ত্রণায় রাস্তায় বের হওয়াও কষ্টকর। যে সড়কগুলোর কাজ হচ্ছে, তাতে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও ঠিকাদাররা নিজের ইচ্ছেমত কাজ করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকায় নির্মাণ কাজে ধীরগতি দেখা দেয়। জনগণের স্বাভাবিক যাতায়াত নিশ্চিত করতে সড়কগুলো দ্রুত ও মানসম্মতভাবে নির্মাণের জোরালো দাবি জানান তিনি।


স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, নির্মানাধীন অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলেই পর্যায়ক্রমে বাকি রাস্তাগুলোর নির্মাণ কাজ করা হবে।


লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মাঠে নিয়মিত কাজ তদারকি করছি। যথাযথভাবে সড়কের কাজ চলছে। কেউ অনিয়মের আশ্রয় নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ নোমান বলেন, পর্যায়ক্রমে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর সংস্কার ও নির্মাণ কাজ চলছে। যথাযথভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


বিবার্তা/সুমন/নুর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com