শিরোনাম
সড়ক জুড়েই খানা-খন্দ, ভোগান্তিতে পর্যটক
প্রকাশ : ০৭ মে ২০১৮, ১১:২১
সড়ক জুড়েই খানা-খন্দ, ভোগান্তিতে পর্যটক
তানভীর আঞ্জম আরিফ, মৌলভীবাজার
প্রিন্ট অ-অ+

পর্যটন জেলা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি আছে মৌলভীবাজারের। প্রাকৃতিক নৈসর্গিক লীলাভূমি খ্যাত এ জেলায় তাই বছরের অধিকাংশ সময়ই পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় জমে থাকে। কিন্তু দুর্ভোগের শেষ নেই দূর-দূরান্ত থেকে ঘুরতে আসা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের। রেলপথে বা সড়কপথে শ্রীমঙ্গলে আসার পর খানা-খন্দে ভরা রাস্তার কারণে ভোগান্তিতে পড়েন তারা। লোক দেখানো নামমাত্র জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করা হলেও তাও আবার টেকসই নয়। তাই সংস্কারের মাস খানেক পরই আবার খানাখন্দে ভরে ওঠে রাস্তা।


তবে এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, আটকে থাকা পানির কারণে রাস্তা খারাপ হয়ে যায়। একটু বৃষ্টি হলেই এসব খানা-খন্দে পানি জমে থাকে। পর্যটকবাহী গাড়ি এসব খানাখন্দ রাস্তার উপর দিয়ে কষ্ট করে নিয়ে যেতে হয়। এতে করে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও বড়লেখার বিভিন্ন নান্দনিক পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের কারণে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন।


পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলের বাসিন্দা মিথুন পুরকায়স্থ বিবার্তাকে জানান, পয়ঃনিস্কাশনের জন্য নালা নিমার্ণ ও রাস্তায় পানি ধরে না রাখার মতো ব্যবস্থায় নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হলে রাস্তা টেকসই হবে। মুলত, সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রেল স্টেশন থেকে বের হয়েই শহরমুখী রাস্তাটি। এ রাস্তাটি ভোগান্তিতে ফেলে স্থানীয় জনগণসহ পর্যটকদের। রাস্তাটির একটি অংশের কাজ সম্পন্ন হলেও বাকি অংশটুকুর (পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে বাজারের সম্মুখভাগ পর্যন্ত) দায়দায়িত্ব নিচ্ছেন না কেউই।



এছাড়া লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা কমলগঞ্জ উপজেলা পর্যন্ত আঁকাবাঁকা রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে ফেলছে চালকদের। শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা এক পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের চালক রবিউল মিয়ার সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের। তিনি জানান, শ্রীমঙ্গলে প্রায়ই আসা হয় তার। ভাঙ্গা রাস্তার ব্যাপারে তিনি জানান, শ্রীমঙ্গলে গত এক বছর আগে যেভাবে রাস্তায় খানাখন্দ ছিলো সেভাবেই আছে। উপরন্তু কিছু বাড়তি জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এসব রাস্তায় গাড়ি চালানোতে ঝুঁকি তো থাকেই, অনেকসময় গাড়িও খারাপ হয়ে যায়।


ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা নাজিয়া চৌধুরী তাসপিয়ার সাথে কথা হয় বিবার্তার এই প্রতিবেদককের। তিনি জানান, জায়গাটা সত্যিই অনেক সুন্দর। নৈসর্গিক লীলাভূমির পাহাড় আর চা বাগানের সমন্বয়ে গঠিত। তবে এখানের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক খারাপ।


সিএনজি চালিত অটোরিকশাচালক ফরিদ মিয়া বিবার্তাকে জানান, রাস্তার এক পাশ ভাঙ্গা থাকলে নিয়ম ভেঙ্গে বাম দিকে না গিয়ে ডান দিকে যেতে হয়। প্রয়োজন তো আর আইন মানে না। এতে করে প্রায়ই অন্য গাড়ির সাথে অযাচিত ঝামেলা বেধে যায়।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চালক বিবার্তাকে জানান, রাস্তা সংস্কারের সময় যে পরিমান উপকরণ দেয়ার কথা তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে দিচ্ছে না বলেই অতি সহজে রাস্তা ভেঙ্গে যায়। রাস্তা সংস্কারের সময় এলাকাবাসী ও জনগণ এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ভালোভাবে মনিটরিংয়ের প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।


শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সদস্য ও হোটেল মালিক এস. কে দাশ সুমন বিবার্তাকে জানান, শ্রীমঙ্গলের খানাখন্দে ভরা রাস্তার কারণে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা শ্রীমঙ্গল সম্পর্কে খুবই খারাপ ধারণা নিয়ে যাচ্ছেন।



শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসীন মিয়া মধু বিবার্তাকে জানান, রাস্তাটি পৌরসভার ভিতরে থাকলেও রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। আর সড়ক জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীরা এই রাস্তা সরেজমিনে পরিদর্শন করে বলছেন রাস্তাটি তাদের ম্যাপেই নেই। তাই আপাতদৃষ্টিতে অভিভাবকহীন এই রাস্তাটির সংস্কার কাজ থেমে আছে দীর্ঘদিন যাবত। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে পর্যটন এলাকাগুলোতে যাওয়ার রাস্তার (শ্রীমঙ্গল - কমলগঞ্জ- শমসেরনগর সড়ক) ভানুগাছ রোড অংশটির অবস্থা বেশী খারাপ। শহরের রেলক্রসিং এর সামনে থেকে চা যাদুঘর পর্যন্ত রাস্তার অধিকাংশ স্থানে ছোট বড় অনেক গর্ত হয়ে আছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ অংশের কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। বরুনা হাজিপুর হয়ে মৎস্য অভয়ারন্য বাইক্কা বিল যাবার রাস্তাটির অনেক স্থানে ভাঙ্গা রয়েছে।


এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বিবার্তাকে জানান, সড়ক ও জনপদ বিভাগ বর্তমানে বিভিন্ন ছোট খাটো সংস্কারের করার কাজ করছে। ভানুগাছ রোড সড়কে প্রায়ই পানি জমাট থাকার কারনে বিটুমিনের তৈরী রাস্তা সহজেই ভেঙ্গে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের পরবর্তি প্রকল্পতে আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থা করবো। এতে রাস্তা সহজে নষ্ট হবে না।


বিবার্তা/আরিফ/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com