শিরোনাম
বড়াইগ্রামে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদককে পেটানোয় বহিষ্কার!
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০১৮, ২৩:৫২
বড়াইগ্রামে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদককে পেটানোয় বহিষ্কার!
নাটোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাবুল ইসলাম সরদার ও সাধারণ সম্পাদক মানিক রায়হানকে মারধোর করার অভিযোগে দুই নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলো উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কে.এম রাসেল হোসেন রাপ্পু ও সাংগঠনিক সম্পাদক রতন সরকার।


বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রাপ্পু ও রতনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়। তবে এর আগে বুধবার বিকালে ছাত্রলীগের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটলে রাতেই কে.এম রাসেল হোসেন রাপ্পু নিজের ফেসবুকে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেয়।


এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস বলেন, রাপ্পু ও রতন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাবুল ও সাধারণ সম্পাদক মানিককে মারধর করেছে, যা বাংলাদেশ ছাত্রলীগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। তাই তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।


সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম বলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কে.এম জিল্লুর হোসেন জিন্নাহ্ ভাইয়ের নির্দেশে ও নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তুলে নিয়ে মারধর করেছে। এটা আসলে অন্যায়।


উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রভাষক কে.এম জিল্লুর হোসেন জিন্নাহ বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছিলো। সাহাবুল ও মানিককে নিয়ে আমি সব ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একাধিক মিটিং করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করেছিলাম। সাহাবুল ও মানিক টাকার বিনিময়ে উপজেলা ছাত্রলীগে পদবাণিজ্য করছে বলে অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। যারা টাকার বিনিময়ে ছাত্রদল ও শিবিরকে ছাত্রলীগে পদ দিচ্ছে তাদের দিয়ে আগামীতে কী আশা করব?


বনপাড়া পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান পিয়াস বলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন মাদক স্পট পরিচালিত হয়। উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে পোষ্ট দেয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে। তাছারা অর্থের বিনিময়ে শিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ইউনিটে নেতা বানিয়েছে। এ সব কার্যক্রম করেও কীভাবে তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক দাবি করে তা আমাদের বোধগম্য নয়। লজ্জা থাকলে তাদের পদত্যাগ করা উচিৎ।


কে.এম রাসেল হোসেন রাপ্পু বলেন, আমি বিএনপি নেতা বাবু হত্যা মামলার আসামি। আমার দাদা শহীদ ডা. আয়নুল হককে বিএনপির শাসনামলে প্রকাশ্যে বনপাড়া বাজারে হত্যা করা হয়অ আমাদের ৪০টি বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়। দুই থেকে তিন বছর বাড়িতে থাকতে পারিনি। বাবু হত্যাকাণ্ডে করা মিথ্যা মামলায় কারাগারে থেকেছি বেশ কয়েক মাস। সে সময় সাহাবুল, মানিক কোথায় ছিলো? সাহাবুল ও মানিক টাকা নিয়ে শিবির ও ছাত্রদলের অনুপ্রবেশকারীদের নেতা বানিয়েছে। এর অসংখ্য প্রমাণ আছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে শিবির দ্বারা পরিচালিত ছাত্রলীগ কমিটিতে আমাকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে, যা আমি কখনোই মেনে নিতে পারি না। তাই আমি সেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।


ছাত্রলীগ নেতা তানভীর রাজু বলেন, আমাকে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করার আশ্বাস দিয়ে সাহাবুল ও মানিক ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমাকে উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সদস্যও করেনি। বেশ কয়েক মাস পূর্বেই বিষয়টা আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসকে জানিয়েছি। এমপি মহোদয়কে বলা সত্ত্বেও তারা এখনো আমাকে টাকা ফেরত দেয়নি।


এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাবুল ইসলাম সরদার বলেন, সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের শাসন করতে পারে, কিন্তু একই বয়সের এবং একই ইউনিটের নেতা হয়ে আমাদের কীভাবে শাসন করে? তারা ভুল করেছে।


সাধারন সম্পাদক মানিক রায়হানের দাবি, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়, কারো থেকে আমি টাকা নেই নাই। যারা অভিযোগ করছে তাদের থেকেই আমি ২৫ হাজার টাকা পাই। আর গত বুধবারের বিষয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছি না।


বিবার্তা/সাকলাইন/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com