শিরোনাম
সাতক্ষীরায় কিশোরী হত্যায় ঘাতকের ফাঁসি
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০১৮, ০০:০০
সাতক্ষীরায় কিশোরী হত্যায় ঘাতকের ফাঁসি
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ধর্ষণের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এক কিশোরীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে রফিকুল ইসলাম শিপন (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতের বিচারক অরুনাভ চক্রবর্তী এ আদেশ দেন।


রফিকুল ইসলাম শিপন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামের ওয়াজেদ ঢালীর ছেলে। তার পালিত পিতা হেকমত শেখের বাড়ি তালা উপজেলার মুড়োগাছায়।


মামলার বিবরনে জানা যায়, হেকমত শেখ সরকারি রাস্তার দুই ধারের গাছ কিনতো। তার পালিত সন্তান রফিকুল ইসলাম শিপন, ময়না ও বক্কর কেনা গাছ কাটার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা শেখপাড়ার আকবর হোসেন মোড়লের বাড়িতে ২০০৯ সালের ১২ জুলাই এর তিন/চার দিন আগে থেকে থাকতো। ২০০৯ সালের ১২ জুলাই রাত ১০টার দিকে ভাত খাওয়া শেষে আকবর মোড়লের মেয়ে সালমা (২৭) একটি ঘরে দরজা দিয়ে খাটে ও তার ভাই আশরাফুল মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়ে। পাশের খোলা ঘরের খাটে বক্কর ও ময়না, মেঝেতে শিপন ঘুমোতে যায়। পাশের ঘরে বাদি আকবর মোড়ল ও তার স্ত্রী সোনাভান বিবি ঘুমিয়ে পড়েন।


পরদিন ১৩ জুলাই ভোরে সোনাভান বিবি উঠে মেয়ের ঘর খোলা দেখতে পান। একপর্যায়ে মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে সে মারা গেছে বলে জানতে পারেন। তখন তার পাশে মোবাইলটিও ছিল না। এ সময় পাশের ঘরে বক্কর ও ময়না থাকলেও শিপনকে দেখতে পাননি। বিষয়টি স্বামী আকবর মোড়লকে বলার পর প্রতিবেশী পঙ্কজ জোয়ারদারের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে সর্বত্র জানানোর একপর্যায়ে ওই দিন সকালে শিপনকে শ্যামনগরের ভুরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের সহায়তায় আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে সোপর্দ করা হয়। কালিগঞ্জ থানার পুলিশ শিপনকে সেখান থেকে গ্রেফতার করে।


জিজ্ঞাসাবাদে শিপন জানায় যে, সালমা ভোরে প্রস্রাব করে ঘরে ঢোকার পর সে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। রাজী না হওয়ায় সালমার বুকে উঠে মুখে ও মাথায় কিল ঘুষি মেরে মুখ চেপে ধরে। ধর্ষণের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার একপর্যায়ে সালমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।


১৩ জুলাই রাতে নিহতের পিতা আকবর মোড়ল বাদি হয়ে রফিকুল ইসলাম শিপনের নাম উল্লেখ করে কালিগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ১৪ জুলাই আসামি রফিকুল ইসলাম শিপন বিচারিক হাকিম এমএ সাঈদের খাস কামরায় সালমাকে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার এসআই আব্দুর শুকুর মৃধা এজাহারভুক্ত আসামির নামে ২০০৯ সালের ২৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১১ সালের ২৭ জুন আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় বাদিপক্ষের ১৭জন ও আসামি পক্ষের তিন জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।


মামলার নথি ও সাক্ষীদের জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামি রফিকুল ইসলাম শিপনের বিরুদ্ধে ফেওজদারি দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক উপরোক্ত আদেশ দেন। তবে আদেশের সময় আসামি শিপন কাঠগোড়ায় উপস্থিত ছিল না।


আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট তপন কুমার দাস।


বিবার্তা/শহীদুল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com