শিরোনাম
কুড়িগ্রামে ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০১৮, ২০:২৬
কুড়িগ্রামে ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে না উঠতে কৃষকের লাগানো বোরো মৌসুমের মাঠের পর মাঠ জুড়ে ধান ক্ষেত চিটায় পরিণত হয়েছে। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে আধা পাকা ধান ক্ষেতে সাদা ধান গাছ দাঁড়িয়ে আছে। ধানের শীষ শুকিয়ে চিটায় পরিণত হওয়ায় মাঠভরা ফসল দৃশ্যমান থাকলেও ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। দিন রাত যে মাঠে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়েছে কৃষক সেই ফসলের মাঠ যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ ধান ক্ষেত শুকিয়ে সাদা হয়ে গেলেও কৃষি বিভাগ থেকে মিলছে না কোনো সদুত্তর।


কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ১১ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। অর্জিত হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৭ হেক্টর। ফসল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ৬১ হাজার ৯১৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাইব্রিডে ৪ দশমিক ৭৬ মেট্রিক টন, উফশী ব্রি ধান-২৮ ৩ দশমিক ৯৩ মেট্রিক টন এবং স্থানীয়তে ১ দশমিক ৯৪ মে.টন।
এর মধ্যে কৃষি বিভাগের তথ্যমতে জেলায় ১১ দশমিক ১৫ হেক্টর জমির ফসল ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত। কিন্তু কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি ব্লাস্ট রোগ ৭০ থেকে ৮০ হেক্টর জমিতে ছড়িয়ে গেছে।


সরেজমিনে সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কালুয়া গ্রামে গেলে কথা হয় কৃষক আব্দুস ছামাদ (৪২)’র সাথে। তিনি বলেন, ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে এবার ৪ একর জমিতে ২৮ ধান আবাদ করেছি। ধানের শীষ বের হয়েছে। ইতিমধ্যে শীষের গোড়ায় ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ওষুধ স্প্রে করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ব্লাস্ট রোগ ধরার কারণে অধিকাংশ ধান গাছে চিটা হয়েছে। পাকা ধান ক্ষেত যেন সাদায় পরিণত হয়েছে।


চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ গ্রামের কৃষক বাতেন মিয়া (৬০) জানান- ১২০ হাজার টাকা খরচ করে এবার ৯ একর জমিতে বোরো লাগিয়েছি। ধানের গাছ পুষ্ট হয়ে শীষ বের হচ্ছে সাদা। যার ভিতরে চাল নেই। ক্ষেতের ৪ ভাগের ১ভাগই চিটা হয়েছে।



উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আঃ আলিম (৪৮) বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে ২৮ ধান আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা হয়েছে। ধান ক্ষেত ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ৭’শ টাকার ওষুধ স্প্রে করেছি। কিন্তু ক্ষেতের কোনো পরিবর্তন দেখছি না। শেষ পর্যন্ত এই ক্ষেত থেকে কি পাব জানি না। একই অবস্থা বিরাজ করছে জেলার রাজারহাট উপজেলার বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেত। কৃষকদের অভিযোগ বিষয়ে কথা হলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আব্দুর রশীদ জানান, ব্লাস্ট রোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। এ জেলায় ব্লাস্ট রোগ যতটুকু ছড়িয়ে পড়েছে আর যাতে নতুন করে কোনো এলাকায় ব্যাপক আকার ধারণ করতে না পারে সেজন্য তৎপর রয়েছে কৃষি বিভাগ।
বিবার্তা/সৌরভ/সুমন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com