শিরোনাম
নব্যতা সংকটে গাবখান চ্যানেল
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০১৮, ১১:৩৩
নব্যতা সংকটে গাবখান চ্যানেল
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঝালকাঠিতে জরুরি ভিত্তিতে গাবখান চ্যানেলটি সংস্কার করা না হলে বন্ধ হয়ে যাবে গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথ। ফলে নৌপথনির্ভর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


তবে চ্যানেলের নব্যতা সংকট-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ নেই বলে জানিয়েছে নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ।


নব্যতা কমে যাওয়া, প্রতিটি বাঁকের মুখে চর জেগে ওঠা ও অসংখ্য ডুবোচরের কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বাংলার স্যুয়েজখাল খ্যাত ঝালকাঠির গাবখান চ্যানেল। গত ত্রিশ বছরে টেকসই ড্রেজিং না হওয়া ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চ্যানেলটি দিয়ে বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দেশী-বিদেশীবড় নৌযানগুলো। এতে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হচ্ছে চালকদের। ফলে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান সমুদ্রবন্দর মংলার সঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নৌ যোগাযোগ হুমকির মুখে পড়েছে।


জানা গেছে, ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিশখালী ও ধানসিঁড়ির মোহনা থেকে পিরোজপুরের সন্ধ্যানদী পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে গাবখান চ্যানেলটি ১৮০০ সালের প্রথম দিকে ব্রিটিশ শাসনামলে কৃত্রিমভাবে কাটা হয়। তখন অবিভক্ত ভারতে এ অঞ্চলের সঙ্গে যোগযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যকে সহজতর করতে চ্যানেলটি খনন করা হয়েছিলো। সেই থেকে গাবখান চ্যানেলটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়া নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ, স্টিমার ও রকেটসহ যোগাযোগের ক্ষেত্রে নৌপথনির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।


দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গাবখান চ্যানেলটি প্রশস্ততা ছিল ২৫০ মিটারেরও বেশি। কিন্তু ক্রমশ তা ১০০ মিটারে নেমে এসেছে। কোনো-কোনো স্থানে প্রশস্ততা আরও কমে গেছে। বড় একটি নৌযান চ্যানেলটিতে প্রবেশ করলে অপর প্রান্ত থেকে নৌ চলাচল বন্ধ করে দেয় নৌট্রাফিক। এছাড়া পলি জমে বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর তৈরি হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ গাবখান চ্যানেল এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুধু জোয়ারের সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে বড় নৌযানগুলো। তাতেও মাঝে মধ্যে বিপাকে পড়েন নৌ চালকরা।


নৌযান চালক বশির উদ্দিন জানান, গাবখান চ্যানেলে প্রবেশ করতেই বাধার মুখোমুখি হতে হয়। ভাটার সময় বড় নৌযানগুলো বাঁক নিয়ে গাবখান চ্যানেলে প্রবেশ করতে পারে না।


এমভি সোনার বাংলা জাহাজের ক্যাপ্টেন সাফায়েত হোসেন জানান, গাবখান চ্যানেলটি যদি জরুরি ভিত্তিতে ড্রেজিং না করা হয়, তাহলে বড় জাহাজগুলোকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে মংলা বন্দরে পৌঁছাতে হবে। এতে সময় ও খরচ উভয়ই বাড়বে। ফলে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।


এদিকে জেলায় বিআইডব্লিউটিএর কোনো কর্মকর্তা নেই। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর ভারপ্রাপ্ত যুগ্মপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গাবখান চ্যানেলের নাব্যতা সংকটের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।


বিবার্তা/আমিনুল/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com