শিরোনাম
ইসলামপুরে অবৈধ বালু উত্তোলন
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০১৮, ২২:৪৪
ইসলামপুরে অবৈধ বালু উত্তোলন
জামালপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জামালপুরের ইসলামপুরের পাথর্শী ইউনিয়নের মোরাদাবাদ এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন যাবত যমুনা নদী থেকে বুলগেট মেশিনে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সরকারের ৪৬৮কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধ।


সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ইসলামপুরের পাথর্শী ইউনিয়নের মোরাদাবাদ থেকে কুলকান্দি পাইলিং ঘাট পর্যন্ত ১৫ ফুট উঁচু একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ চলছে। ওই বাঁধ নির্মাণের জন্য এবং বিভিন্ন এলাকায় বালু বিক্রির উদ্দেশ্যে স্থানীয় প্রভাবশালীরা যমুনার বুকে জেগে উঠা হরিণধরা ও শশারিয়া নামক দুটি চর থেকে বুলগেট মেশিনে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।


স্থানীয়রা জানান,যমুনার বুকে কয়েক বছর আগে জেগে উঠেছিল পাথর্শী ইউনিয়নের হরিণধরা ও শশারিয়া বাড়ি নামক দুটি বিশাল আকারের নতুন চর। ওই চর দুটি জেগে উঠার পর থেকে সেখানে ফসল ফলিয়ে জীবন ধারণ করছিলেন পাথর্শী ও কুলকান্দি ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। কিন্তু চাষিদের বিধি বাম। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে সম্প্রতি হরিণধরা ও শশারিয়া বাড়ি নামক নতুন চর দুটির প্রায় তিন হাজার একর জমি যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।


স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ,স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, সাহেব আলী, আব্দুল মান্নান, ফকির আলী খান, বেলাল মিয়া, নয়ানী শেখ, সুমন শেখ, ধন মিয়া, গেল্লা শেখ, বাহাদুর মাষ্টার, শাপলা রহমান, সামছুল হক, সুমন মন্ডল ও আতিকুর রহমান সরকার গংরা যমুনা নদী থেকে ৪টি বুলগেট মেশিনে প্রতিদিন ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার সেপ্টি বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করছেন। তারা ওই বালু মোরাদাবাদ নৌঘাট ও দক্ষিণ শারিয়াবাড়ি স্কুল মাঠের পাশে জমিয়ে সেখান থেকে ট্রাক ও ভটটভটি যোগে বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে রোজগার করছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কৃষকরা জানান, তারা বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেও কোন সমাধান পাননি। উল্টো বালু উত্তোলন বন্ধের অভিযোগ করায় বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সদস্যদের হাতে নিরীহ কৃষকরা লাঞ্ছিত হয়েছে। পাথর্শী ইউনিয়নের বালু ব্যবসায়ীরা নিরীহ কৃষকদের মারধোর করাসহ কয়েক দফা প্রাণ নাশের হুমকিও প্রদান করেছে।


ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অভিযোগে আরও জানান,পাথর্শী ইউনিয়নে যমুনা নদী থেকে দীর্ঘদিন যাবত বাধাহীনভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। আর যমুনা থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকার বিরূপ প্রভাবে সম্প্রতি হরিণধরা ও শশারিয়া বাড়ি নামক চর দুটি ইতিমধ্যেই যমুনা গর্ভে বিলীন হয়েছে। অপরদিকে যমুনা নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়েছে ইসলামপুরে ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত যমুনার বামতীর সংরক্ষণ বাঁধ।



অভিযোগ উঠেছে,কুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সনেট, পাথর্শী ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম এবং স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান সরকার ও সুমন মন্ডল গংরা এলাকায় বালু উত্তোলনের জন্য দুইটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। ওই বালু উত্তোলন সিন্ডিকেট সদস্যরাই মোটা অঙ্কের বিশেষ সমঝোতায় স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার সেপ্টি বালি উত্তোলন পূর্বক বিক্রি করছে। তবে কুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান সনেট যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের সাথে কোন ভাবেই সংশ্লিষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন।


পাথর্শী ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুল আরও জানান, যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং থানা পুলিশকে তিনি কয়েক দফা অনুরোধ করেও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পারেননি।


বিবার্তা/ওসমান/সুমন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com