শিরোনাম
ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০১৮, ০৫:১৩
ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল সড়কের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ পাশে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে। খবর পেয়ে কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন।


স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে কলেজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয় পপি আক্তার (১৮)। তিনি শংকুচাইল ডিগ্রি কলেজ থেকে এই বছর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওইদিন মাথা ব্যথা বলে কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসে। বাড়িতে না ফিরে স্টেশনে এসে একটি দোকান থেকে ঠাণ্ডা পানীয় বোতল নিয়ে পান করতে করতে স্টেশনের দক্ষিণে চলে যেতে দেখেছে বলে স্থানীয়রা জানান। কিছুক্ষণ পর চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংগামী গোধূলী এক্সপ্রেস যাওয়ার পর তার ছিন্নভিন্ন দেহের বিভিন্ন অংশ দেখতে পায়। পরবর্তীতে তার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়।


পপি আক্তার জেলার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর স্টেশন সংলগ্ন সাবেক তাজু চেয়ারম্যানের বাড়ির চা দোকানদার বাচ্চু মিয়ার দ্বিতীয় মেয়ে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় তার দেহেরে বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন স্থানে ছিন্নভিন্ন হয়ে পরে রয়েছে এবং তার দেহের একটি অংশ শশীদল স্টেশনের পাশ থেকে রেলওয়ে পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।


তার মামা মান্নান মিয়া জানান, এই দিন সকালে পপি আক্তারের মা নাছিমা আক্তার ও বাবা বাচ্চু মিয়া অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা নিতে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে আসে। পপি সকালে অসুস্থ বাবা-মাকে ডাক্তার দেখানোর জন্যে ঘর থেকে বের করে তারপর কলেজে যায়। কলেজে গিয়ে একটি ক্লাস করে মাথা ব্যথা বলে কলেজ থেকে চলে আসে। কিন্তু বাড়িতে আসেনি। দুপুরে আমরা খবর পাই পপি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে।


তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনি একটি দোকান থেকে তরল পানির বোতল নিয়ে পান করতে করতে দক্ষিণ দিকে চলে যায়। তবে কি কারণে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেনি। তার মারা যাওয়ার কারণ সম্পর্কে আমরাও তেমন কিছু বলতে পারবো না। তবে মাঝে মধ্যে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেত। বিভিন্ন কবিরাজের কাছে নিলে তারা বলেছেন জীনে ভর করেছেন যার কারণে পপি এমন আচরণ করে।


বাড়ির লোকজন থেকে জানা যায়, সেদিন পপি আক্তার কলেজে যেতে কোনো বই খাতা নিতে দেখিনি। তবে ওই দিন সকালে তার চলাচল স্বাভাবিক ছিল এবং সুস্থ মস্তিষ্কের কথাবার্তা বলতে ও চলতে দেখা যায়। কিছুদিন আগে ঢাকা সোনারগাঁও কলেজ থেকে শিক্ষা সফরে গিয়ে ছিলেন।


পাশের কবিরাজ দাদা ঝাড়ু মিয়া জানান, মাঝে মধ্যে আমার কাছে নিয়ে আসলে আমিও তাকে জার-ফুঁ দিতাম। তবে সে একটু জেদি ছিল, হঠাৎ রেগে যেতে দেখতাম, সে দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। যার কারণে হয়ত বা তার আল্গা (জীন) ধরেছে। ওই দিন তার ছোট বোন প্রিয়া আক্তার স্কুলে চলে যাওয়ার কারণে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনি।


স্থানীয় এক সিএনজি ড্রাইভার বলেন, আমার গাড়ি দিয়ে কলেজে প্রায় সময় যাতায়াত করতেন আমার দৃষ্টিতে তার কোনো মানুষিক সমস্যা দেখতে পাইনি। তবে কিছু লোক ধারণা করছেন তার এই আত্মহত্যার পিছনে কোনো রাগ লুকিয়ে থাকার কারণ রয়েছে।


কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ওসি নজরুল ইসলাম জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা খণ্ডাংশ সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।


বিবার্তা/বাবর/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com