প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ৬৭৩টি পরিবারের তালিকা মিয়ানমারকে দেয়ার পরও থেমে নেই তাদের অনুপ্রবেশ। গত দুই দিনে দেশটির বুচিডং থেকে ৮৪ পরিবারের ৩৮৩ রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।
এসব রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনসহ পারিবারিক তালিকা প্রণয়ন করে ক্যাম্পে অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তারা।
তালিকা পাঠানোর পরও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানান, প্রত্যাবাসন বিলম্বিত ও মিয়ানমারে অবস্থিত অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা খাদ্য সংকটে পড়ে এদেশে চলে আসছে।
তবে প্রত্যাবাসন শুরু হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে সীমান্তের তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্য রেখায় পাঁচ মাস ধরে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে না চাওয়ায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে প্রশাসন। তবে ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মনজুরুল হাসান খান নো ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার কথা জানিয়েছেন।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ জানিয়েছেন, সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থিত প্রায় আট হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রত্যাবাসন কমিটি প্রস্তুতি নিচ্ছে। যে কারণে শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে উঠছে। তারা চেষ্টা করছে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ার জন্য।
এ ঘটনা নিয়ে ওইসব রোহিঙ্গারা বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেছে বলে জানিয়েছেন তাদরে নেতা দিল মোহাম্মদ। তিনি বলেন, প্রতি রাতেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শূন্যরেখায় তাদের বস্তির পাশে এসে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করছে। এমনকি রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর, ঢিল ও খালী মদের বোতল নিক্ষেপ করছে। যে কারণে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে না ফিরে কুতুপালং ক্যাম্পে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ন সচিব) আবুল কালাম জানান, আগামী মঙ্গলবার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিকের নেতৃত্বে দুই দেশের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গাদের কখন, কোথায় ও কীভাবে স্থানান্তর করা হবে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক জানান, সীমান্ত এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের জেলা পর্যায়ের বৈঠকের ব্যাপারে তিনি এখনো অবহিত নন।
গত শুক্রবার ঢাকা সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জেনারেল কিয়াও সোয়ের কাছে ৬৭৩ পরিবারের আট হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা হস্তান্তর করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিবার্তা/মানিক/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]