শিরোনাম
স্কুল ফাঁকি দিয়ে ইট তৈরির কাজে শিশু
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৪০
স্কুল ফাঁকি দিয়ে ইট তৈরির কাজে শিশু
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কেউ পারিবারিক অভাবের কারণে আর কেউ নিজে আয় করে ইচ্ছেমতো খরচ করতে উপার্জনের পন্থা হিসেবে কাজ করছে ইট তৈরির কারখানায়। পারিবারিক অভাবের কারণে সংসার চালাতে সহায়তা করতে আবার কেউ খেলার সামগ্রী কিনতে অথবা অনুষ্ঠানে পিতার কাছে টাকা না চেয়ে নিজের উপার্জনে খরচের সুখ নিতে ইট তৈরির কারখানায় শিশু শ্রমের কাজ করছে।


প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে তাদের বেতন দিচ্ছে মালিক। প্রতিদিনের বেতন প্রতিদিন সন্ধ্যায় না নিয়ে একত্রে জমিয়ে নিতে মালিকপক্ষ সব টাকা পরিশোধ না করে বিভিন্ন অজুহাতে কমিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেছে শিশু শ্রমিকরা।


রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম পুটিয়াখালীগ্রামের মোঃ রুস্তম আলী হাওলাদার'র ইট তৈরির কারখানা (অনুমোদনহীনপাঁজা) মেসার্স গ ঞ ঐব্রিকসে গিয়ে দেখা যায়, শিশু শ্রমিকের কাজ করছে লোকমান (১২), আঃ শুক্কুর (১৩), মোঃ সাব্বির হোসেন (১২), হৃদয় হোসেন (১৬), সবুজ (১৬), শাহীন (১৬), তারেক (১৭)। তারা সবাই পড়ালেখার কাজে জড়িত। তাদের তদারকির জন্য রয়েছে আব্দুল বারেক নামের আরেক শ্রমিক। একে একে কথা হয় সবার সাথেই।


লোকমান জানায়, বাবা-মা সবাই আছে। একটি কওমী মাদ্রাসা থেকে পড়াশুনা করে পুটিয়াখালী আলিয়া মাদরাসায় ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে সে। বাড়ি থেকে মাদরাসায় যেতে অনেক দূর। তাই এখানে কাজ করে সেই টাকা দিয়ে একটি বাইসাইকেল কিনবে। এরপর যে টাকা থাকবে তা দিয়ে কিছু খেলাধুলার সামগ্রী কিনবে আর মাহফিল বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে গেলে নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করবে।


আঃ শুক্কুর জানায়, কয়েক বছর পূর্বে বাবা মারা গেছে। মা এবং ৩ ভাই-বোনের সংসার। পশ্চিম পুটিয়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে সংসার চালানোর খরচ হিসেবে ইট তৈরির কারখানায় কাজ করতে হচ্ছে।


সকল শিশু শ্রমিকরা শুকনো কাঁচা ইট পাঁজায় সাজানোর কাজে নিয়োজিত। এদের সবারই বেতন ২ শত ৫০ টাকা।


একই ভাটায় ভিন্ন রকম কাজ করছে ১০ম শ্রেণির ছাত্র সবুজ ও শাহিন এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র তারেক। তারা জানায়, আমাদের কাজ প্রস্তুতকৃত নরম মাটি দিয়ে ইট তৈরির খড়মায় ফেলে কাচা ইট রোদে শুকানো। শুকানো হলে পাশেই সারি দিয়ে রাখা। এতে প্রতি হাজারে ১ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে। আমরা সেই চুক্তিতে কাজ করি। প্রতিদিন আমাদের দেড় থেকে ২ হাজার ইট প্রস্তুত করা হয়। আমাদের তদারকিতে আছেন বয়স্ক আঃ বারেক। তার বেতনও আমাদের মধ্যে। তাতে আমাদের প্রতিদিন ৩শত টাকা বেতন আসে।


শিশু শ্রমের বিষয়ে ইট তৈরির কারখানার মালিক মোঃ রুস্তম আলী হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে তার সাথে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।


বিবার্তা/আমিনুল/শাহনেওয়াজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com