শিরোনাম
তীব্র শীত ও কুয়াশায় ঝরে যাচ্ছে পান
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:৩৯
তীব্র শীত ও কুয়াশায় ঝরে যাচ্ছে পান
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে ছত্রাকজনিত অজ্ঞাত রোগে পচে যাচ্ছে পান। গত এক সপ্তাহে এ রোগে পানগাছের পাতা ঝরে পড়ছে। এ কারণে প্রথম দিকে পানের দাম কম থাকলেও বর্তমানে তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। আগে পান চাষিরা বাজারে এক চলি-(৩৬ পিস) ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করলেও বর্তমানে পান সংকটের কারণে প্রতি চলি (৩৬ পিস) ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে সেই পান বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন হাট-বাজারে।


ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পানের গ্রাম হিসেবে পরিচিত বারকইকরনের পানচাষী অলিউর রহমান জানান, তার ৩০ শতাংশ জমিতে পানের বরজ রয়েছে। অজ্ঞাত রোগে পান ঝরেযাচ্ছে। এতে তার ৪০ হাজার টাকার পান নষ্ট হয়েছে।


সদর উপজেলার বারই বাড়ি এলাকার পানচাষী অসিম মন্ডল জানান, তার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হবে।


কৃষিবিদ কামরুন্নাহার তামান্না জানান, পান একটি অর্থকারী ফসল। আমাদের দেশে পানের বরজ খুব বেশি দেখা না গেলেও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। দেশে বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। এতে অনেক ঔষধি গুণ বিদ্যমান। কিন্তু রোগবালাই পান উৎপাদনের একটি প্রধান অন্তরায়। পানে গোড়া পচা, ঢলে পড়া, পাতা পচা, অ্যানথ্রাকনোজ, সাদা গুঁড়া ইত্যাদি রোগ দেখা যায়।


তিনি বলেন, সেক্লরোসিয়াম রফসি নামে এক ধরণেন ছত্রাক মাটিবাহিত এবং অন্যান্য শস্যেও আক্রমণ করে। মাটিতে জৈব সার বেশি ও খড়কুটো থাকলে এবং পানি সেচের মাধ্যমে আক্রান্ত ফসলের জমি হতে সুস্থ ফসলের মাঠে ছড়িয়ে পড়ে। রোগাক্রান্ত লতা-পাতা বরজ থেকে তুলে পুড়ে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধী পানের জাত ব্যবহার করতে হবে।


তিনি আরো বলেন, নতুন বরজ তৈরির ক্ষেত্রে সুস্থ সবল রোগমুক্ত পানের লতা সংগ্রহ করতে হবে। পানের বরজ সবসময় আগাছা মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ট্রাইকোডারমা কম্পোস্ট সার প্রতি গাছে ৫ গ্রাম হারে প্রয়োগ করতে হবে। লতা রোপণের পূর্বে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে প্রোভেক্স বা ব্যভিস্টিন দ্বারা লতা শোধন করে নিতে হবে। বরজে রোগ দেখা দিলে প্রোভেক্স বা ব্যভিস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় মাটিতে স্প্রে করতে হবে।


উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, আমরা চাষীদের পাশে আছি। সবসময় চাষীদের প্রয়োজন অনুযায়ী পরামর্শ দিচ্ছি। প্রাকৃতিক কারণে এখন পান চাষীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।


জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মোঃ আবু বকর সিদ্দিক জানান, পানচাষীদের এ মৌসূমে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। তাদের আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানোর প্রক্রিয়া চলছে। বরাদ্দ এলে সহায়তা করা হবে।


বিবার্তা/আমিনুল/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com