মিয়ানমার সামরিক জান্তা ও সেখানকার উগ্রপন্থী বর্মী সন্ত্রাসীদের জ্বালাও-পোড়াও, ধর্ষণ, লুটপাট ও গণহত্যার ভয়ে এদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা উখিয়া-টেকনাফে ১২ অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। সরকার এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ,শিশুদের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করে মঙ্গলবার পর্যন্ত সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গার বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
অভিযোগ উঠেছে এলাকার কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সামগ্রী ভোগের লক্ষ্যে নিজের স্ত্রী,সন্তানদের নিয়ে রোহিঙ্গা পরিচয়ে নিবন্ধন করেছে। এ ঘটনায় পালংখালী ইউনিয়নের মুছারখোলা গ্রামের আব্দুল গফুরের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী কহিনুর আক্তার বাদী হয়ে মঙ্গলবার উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেছে। অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছে ইউএনও।
অভিযোগের সুত্রে জানা গেছে, কহিনুর আক্তারের স্বামী আব্দুল গফুর দীর্ঘদিন যাবৎ মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিল। গত দেড় মাস আগে দেশে ফিরে প্রথম স্ত্রী কহিনুরকে তালাক দিয়ে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। এমতাবস্থায় আব্দুল গফুর ছলেমা খাতুন (৩০) নামের আরেক মেয়েকে বিয়ে করে।
তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী কহিনুর আক্তার অভিযোগ করে জানান, তার তথাকথিত স্বামী আব্দুল গফুর সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সামগ্রী ভোগ করার জন্য তার সন্তান জসিম উদ্দিন(৮) সোমাইয়া জেসমিন রিয়া(৭) তানভির হাসান শাহীন (৫) ও আব্দুল গফুরের দ্বিতীয় স্ত্রী ছলেমা খাতুন(৩০) কে মিয়ানমারের চৌপ্রাঙ্গ গ্রামের স্থানীয় রোহিঙ্গা দেখিয়ে বায়োমেট্টিক নিবন্ধন করে ত্রাণ সামগ্রী ভোগ করতে থাকে। কহিনুর আক্তার আর তার ছেলে-মেয়েদের মুছারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকতে বাধ্য করায় তাদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি তার ছেলে-মেয়েদের ফিরে ফেতে প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন সাংবাদিকদের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ পার্সপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ জাকের হোসেন বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত সাড়ে ৭লাখ রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয়দের নিবন্ধন করার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওই কর্মকর্তা জানান, তদন্ত করে স্থানীয় প্রমানিত হলে যার মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন, স্থানীয় ৪ জন রোহিঙ্গা পরিচয়ে নিবন্ধন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিবার্তা/শফিক/ইমদাদ