সাভারে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন মণ্ডলের দেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন করা হয়।

সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খাগান বাজার থেকে আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোগে আমিনবাজার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এইচ এম সালাউদ্দিন মঞ্জুর নেতৃত্বে এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। সংযোগ বিচ্ছিন্ন কাজে সাভার তিতাস গ্যাসের প্রায় ৬০ সদস্যের একটি দল অংশ নেয়।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায় গত কয়েক মাস আগে সাভারের বিরুলিয়ার খাগান ও আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার করে টাকা নিয়ে প্রত্যেক বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেন আশুলিয়ার আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকার নায়েব আলীর ছেলে ও আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন মণ্ডল ও চাঁনগাও এলাকার নবী বেপারীর ছেলে সিপাই মিয়া । সোমবার সাভার তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ওই দুই এলাকার প্রায় দুই হাজার পরিবারের মধ্যে দেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ওই দুই এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে তিনটি মূল পয়েন্টে মাটির নীচে থাকা গ্যাসের পাইপ তুলে নিয়ে সিলগালা করে দেয়। এ সময় কয়েকশ পাইপ উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় মূল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবহার করা রাইজারগুলোও খুলে নেয়া হয়। এঘটনায় অবৈধ গ্যাস সংযোগকারিরা নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলো।

এ সময় অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারের অভিযোগে ৯ জনকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান জানান, সাভারে সব অবৈধ গ্যাস লাইন পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হবে। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার এ অভিযান নিয়মিত চলবে। এছাড়া আজ রাতে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারী রুহুল আমিন মণ্ডল ও সিপাইর বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হবে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ আশুলিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন মন্ডল ও চাঁনগাও এলাকার সিপাই আশুলিয়া ও সাভারের খাগান এলাকায় বিভিন্ন বাসা বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। স্থানীয়রা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে আশুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতা জানান আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন মণ্ডল এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত, প্রকাশ্যে তিনি এলাকায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে চলাফেরা করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পাড়াগ্রাম এলাকায় কয়েক কোটি টাকা দিয়ে একটি তিন তলা ডুপ্লক্সে বাড়ি বানিয়েছেন।

গত কয়েকদিন আগে তার ভাই রুবেল মণ্ডল মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলো। কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে আসার পরে আবারও এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম শুরু করেছেন। মাদক দিয়ে তিনি এলাকার যুব সমাজকে নষ্ট করে দিচ্ছেন ।

অন্যদিকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাধা দেয়ায় আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ চাঁনের প্রকাশ্যে মাথা কেটে নেয়ার হুমকি দেন রুহুল আমিন মণ্ডল। সন্ত্রাসীদের ভয়ে ওই ইউপি সদস্য মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানা গেছে।

এ সময় সাভার তিতাস গ্যাস অফিসের সহ ব্যবস্থাপক আনিসুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এদিকে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অভিযানের সময় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

বিবার্তা/শরিফুল/ইমদাদ