শিরোনাম
দিনাজপুরে পোকা দমনে আলোক ফাঁদ
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:০৯
দিনাজপুরে পোকা দমনে আলোক ফাঁদ
শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
প্রিন্ট অ-অ+

বন্যার দুর্ভোগ শেষ না হতেই আমন ক্ষেতে পোকা ও রোগ-বালাইয়ের আক্রমনে দিশেহারা দিনাজপুরের কৃষকেরা। এমতাবস্থায় আশীর্বাদস্বরুপ কৃষি বিভাগের আলোক ফাঁদ। এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পোকা দমনের ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছরে দিনাজপুর অঞ্চলে ৪ লাখ ৯১ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপন করা হয়েছে। যার মধ্যে দিনাজপুরে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৭১০ হেক্টর, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর ও পঞ্চগড়ে ৯৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমি রয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৫০৮ মে.টন চাল।


কৃষকরা বলছেন, এবারের ভয়াবহ বন্যায় তাদের রোপন করা চারার বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে যায়। তাই বন্যার পানি নামতেই অধিকাংশ জমিতে তাদেরকে বাড়তি খরচ করে ২ বার চারা রোপন করতে হয়েছে। যার ফলে হেক্টর প্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে।


তাদের মতে, এবারে বন্যায় মাটিতে পলি জমায় জমি উর্বর হয়েছে। তাই বাড়তি খরচ করেও তাদের মনে একটা আশা রয়েছে ভাল ফলন হওয়ায়। তবে আশঙ্কা রয়েছে, যদি নতুন করে পোকা মাকড় কিংবা রোগ-বালাই আক্রমণ করে তাহলে তাদের আশা পুরোটাই ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে।


বিরলের ছেতরা গ্রামের কৃষক শ্যামল কুমার রায় জানান, বন্যার ফলে মাটিতে পলি জমেছে। তাই এখন তার ক্ষেত সবুজের সমারোহ হয়ে উঠেছে। তবে অনেক স্থানেই পোকা ও রোগ বালাইয়ের আক্রমণ হওয়ায় কিছুটা চিন্তিত রয়েছেন তিনি। যদি তার ক্ষেতেও এই ধরনের পোকা কিংবা রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ হয় তাহলে তাকে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।


এদিকে কৃষকদের ফসলে কোন পোকার আক্রমণ যেন না হয় সেজন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আলোক ফাঁদ করে পোকা দমনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। একইসাথে ফসলে কোন পোকা কিংবা রোগ বালাই দেখা দিলে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে প্রতিকার পাওয়া সে ব্যাপারেও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। তাছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষকদের ফসল উৎপাদন নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।


দিনাজপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন জেলাতে পোকার আক্রমণ দেখা দিলেও দিনাজপুরে পোকার আক্রমণ অনেক কম। তাই যাতে করে কোনক্রমেই পোকা কিংবা রোগ-বালাই আক্রমণ করতে না পারে এবং কৃষকরা যাতে করে হাসিমুখে উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারে সেজন্য বিভিন্ন স্থানে আলোক ফাঁদের সাহায্যে পোকার উপস্থিতি সনাক্ত করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। একইসাথে পোকা কিংবা রোগ বালাই আক্রমণ হলে কি ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে এজন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কৃষি ও কৃষকদের নিয়ে ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। কারেন্ট পোকা, বিপিএইচ ও বাদামী গাছ ফড়িং ধানের জমিতে আক্রমণ করলে এর জন্য প্লেনাম, মিফসিন ও সফসিন। চুঙ্গি পোকা আক্রমণ করলে এর জন্য ভিরতাকো। ব্লাস্ট ও খোলা পোচা রোগে জমি আক্রান্ত হলে, এর জন্য এমিস্টার টপ, ফিলিয়া, নাটিভো ও ট্রুপার ব্যবহার করতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।


তিনি আরো জানান, দিনাজপুর অঞ্চলের অবস্থা যেমন এতে করে নতুন কোন পোকা কিংবা রোগ বালাই দেখা না দিলে অনেকটা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন কৃষকরা।


বিবার্তা/শাহী/আমিরুল


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com