সাতক্ষীরায় মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে বেশ সাফল্য এসেছে। এ পদ্ধতিতে লাউ, কুমড়া ও করোলার বাম্পার ফলনের আশা করেছেন কৃষকরা।

এতে একই জমির বহু ব্যবহারে কৃষকের আয় যেমন কয়েক গুণ বাড়ছে, তেমনি দেশে সবজির চাহিদা মেটাতেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের মিঠাবাড়ি বিলে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত বিঘা জমির মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে লাউ, কুমড়া ও করলার চাষাবাদ করা হয়েছে। মাচায় ঝুলছে হাজার হাজার করলা, লাউ ও কুমড়া। একই সাথে ঘেরের বেড়িতে লাগানো হয়েছে পুঁইশাক ও ঢেঁড়স।

মিঠাবাড়ির কৃষক মমিনুর রহমান জানান, তিনি তার ছয় বিঘা জমির ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে লাউ, কুমড়া ও করলার চাষাবাদ করেছেন। মাঘ মাস পর্যন্ত এভাবেই মাছের পাশাপাশি সবজি উৎপাদন চলবে। তারপর পানি শুকিয়ে গেলে রোপন করা হবে ধান।

তিনি জানান, তার ছয় বিঘা ঘেরে নেট, বাশ ও কট সুতা দিয়ে মাচা তৈরিতে আট হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বাম্পার ফলনে ইতোমধ্যে লাখ টাকা ছাড়িয়েছে আয়।

১০ বছর যাবৎ মাচা পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনকারী মমিনুর রহমান আরও জানান, মাচা তৈরির খরচ প্রতিবছর হয় না। দুই-তিন বছর পরপর মাচা তৈরি করতে হয়। এতে লাভের পরিমাণ বাড়ে।

শুধু মমিনুর রহমানের ঘের নয়, কৃষক বাক্কার সরদার, আজিবার মোড়ল, জাহিদ হোসেনের ঘেরসহ যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। প্রত্যেকের ঘেরের মাচায় ঝুলছে করলা, লাউ ও কুমড়া।

শুধু তালা উপজেলা নয়, জেলার কালিগঞ্জ, কলারোয়া, দেবহাটা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলায়ও ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে চাষাবাদ কৃষিতে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, সাতক্ষীরায় যে পরিমাণ সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে তার ৩০ শতাংশ উৎপাদিত হয় মৎস্য ঘেরের আইলে অথবা মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় জেলার এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ দিন দিন বাড়ছে।

বিবার্তা/সেলিম/ইমদাদ