ভোলার পশ্চিম ইলিশা বাঘারহাট ব্র্যাক অফিসের ফিল্ড অফিসার নিখোঁজ মো. মইনুল হোসেনের মৃতদেহ হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার ভোলা সদর ও মেহেন্দিগঞ্জ সীমানার বটতলা খাল থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা কিস্তির দেড় লাখ টাকা লুটে নিয়ে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এলাকাবাসীর মতে মইনুল ওই এলাকায় একজন সৎ ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সমিতির দরিদ্র নারী পুরুষ সদস্যদের কাছে তিনি ছিলেন আপনজন। এমন ব্যক্তির নির্মম হত্যাকাণ্ড মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। ভোলা জেলা সদরের পশ্চিম ইলিশা শ্যামপুর গোলপাড় ব্রাক মহিলা সমিতি এলাকাতেই ওই হত্যাকাণ্ড হয়েছে এমনটাও ধারণা করছেন পুলিশ।
গত বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি ওই সমিতিতে কিস্তির টাকা তুলতে সদস্যদের বাড়ি বাড়ি যান। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তাকে টাকা আদায় করতে দেখেন সেখানকার অনেকেই। কিন্তু তারপর থেকে তিনি নিঁখোজ। মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিলো। নিখোঁজের পর ভোলা থানার ওসি মীর খায়রুল কবিরসহ পুলিশের একটি টিম গত দুই দিন ধরে মইনুল হোসেনের সন্ধানে চিরুনী অভিযান চালায়।
ব্রাক শাখা অফিস ম্যানেজার বশিরুল আল হেলাল জানান, ফিল্ড অফিসার মইনুল এলাকায় ৩ বছর সুনামের সাথে কর্মরত ছিলেন। মইনুল দুই শিশু কন্যা ও স্ত্রীসহ হাওলাদার বাজারে ভাড়া বাসায় থাকতেন। মইনুলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এছাড়া ব্রাক কর্মকর্তারা জানান, সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে ওই দিন মইনুল প্রায় দেড় লাখ টাকা (ঋনের কিস্তি) আদায় করেন। ঈদের ছুটিতে অন্যরা নিজ বাড়িতে ফিরে গেলেও মইনুল স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সমিতি এলাকায় ঈদ পালন করেন।
মইনুলের স্ত্রী রুমা বেগম জানান, গত বুধবার দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি তিনি। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একবার ফোন করে ৭ বছরের মেয়ে লাবনী ও আড়াই বছরের মেয়ে লামিয়ার খোঁজ নেন। তারা যেন পুকুরে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেন।
তিনি আরো জানান, বুধবার সন্ধ্যায় সমিতির এক সদস্য বাসায় এসে মইনুলের খোঁজ করে বলেন তাদের সমিতি থেকে দুপুরে তিনি ফিরে আসেন। ওই দিন রাতে মইনুল বাড়ি না ফিরলে খোঁজ নিতে থাকেন স্ত্রী রুমা বেগম। বৃহস্পতিবার বিষয়টি ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে জানালে তিনি ভোলা থানাকে এ বিষয়ে অবহিত করেন।
পরে শুক্রবার সকাল থেকে ওসি মীর খায়রুল কবির, সহকারী পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম, এসআই জসিম, এসআই রিয়াজ পশ্চিম ইলিশা গিয়ে ওই সমিতি এলাকায় চিরুনী অভিযান চালান। ওই সময় পুলিশ বেল্লাল ও অলিউল্লাহ নামের দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শনিবার দুপুরে মইনুলের স্ত্রী রুমা বেগম বাদি হয়ে ভোলা থানায় একটি মামলা করেন।
ভোলা থানার ওসি মীর খায়রুল কবির জানান, সমিতির ঋনের কিস্তির টাকা তুলতে বুধবার সকালে বাসা থেকে বের হন মইনুল। এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি। ধারণা করা হচ্ছে তাকে সমিতি এলাকায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ভোলা ও মেহেন্দী গঞ্জ সীমনার খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়।
বিবার্তা/পুষ্পেন্দু/আমিরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]