শিরোনাম
থানার ‌‘ক্যাশিয়ারকে’ পুলিশ সাজিয়ে অর্থবাণিজ্য
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ২০:১৭
থানার ‌‘ক্যাশিয়ারকে’ পুলিশ সাজিয়ে অর্থবাণিজ্য
যশোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

যশোরের ঝিকরগাছায় থানার ‘ক্যাশিয়ারকে’ পুলিশ সদস্য সাজিয়ে অভিযানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে পাসপোর্টযাত্রীদের তল্লাশির নামে ঝিকরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন ওই ‘ক্যাশিয়ার’ দেলোয়ার হোসেনকে পুলিশের জ্যাকেট পরিয়ে অভিযানে নিয়ে ব্যাপক অর্থবাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একে ট্রাভেলসের একটি পরিবহনে তল্লাশি অভিযানের সময় যাত্রীদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে তাদের অভিযান ও অর্থবাণিজ্যের চিত্র। প্রায় একঘণ্টা বাসটি দাঁড় করিয়ে চার বস্তা ভারতীয় মালামাল জব্দ করলেও অর্থের বিনিময়ে তা ছেড়ে দেয়া হয়। ভুয়া পুলিশের অভিযানের ছবি ও ভিডিও সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।


এ ব্যাপারে ঝিকরগাছায় থানার ওসি (তদন্ত) ফকির আজিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- অভিযোগের ব্যাপারে আমি এসআই মোয়াজ্জেমকে জিজ্ঞাসা করেছি। সে আমাকে বলেছে, অভিযানে দেলোয়ার ছিল, কিন্তু পুলিশের পোশাক পরিহিত ছিল না।


এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, অভিযানে দেলোয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ঠিক করেনি এসআই মোয়াজ্জেম। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


প্রত্যক্ষদর্শী ও বাসের যাত্রীরা জানান, ভারত থেকে ফিরে আসা ঢাকাগামী এক দম্পতির চারটি লাগেজ জব্দ করে পুলিশ। পরে ভুয়া পুলিশ দেলোয়ার তাদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ও কয়েকটি দামি শাড়ি রেখে লাগেজ ছেড়ে দেয়।


এছাড়াও অন্য আরেক পাসপোর্টধারী যাত্রীর ব্যাগে অতিরিক্ত মালামাল আছে দাবি করে এসআই মোয়াজ্জেম চারটি থ্রিপিস কেড়ে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে যাত্রীরা জানতে পারেন এসআই মোয়াজ্জেমের সঙ্গে অভিযানে অংশ নেয়া পুলিশের জ্যাকেট পরিহিত দেলোয়ার পুলিশ সদস্য নন, তিনি পুলিশের পোশাক পরে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ান।


মোয়াজ্জেমসহ থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের প্রভাবে বিভিন্ন সময় পুলিশ সেজে অপকর্ম করে দেলোয়ার। স্থানীয়রা জানায়, দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে থানার কথিত ‘পাবলিক ক্যাশিয়ার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। আগে সে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করতো। তবে বছর দশেক আগে সে চাকুরিচ্যুত হয়।


ঢাকাগামী একে ট্রাভেলসের একাধিক যাত্রী বলেন, বেনাপোলে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ও আমড়াখালীতে বিজিবি চেকপোস্টে চেক হওয়ার পরেও মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা এবং অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া চরম হয়রানি ছাড়া কিছুই নয়। চেকপোস্ট বসিয়েছে ভালো কথা, তারা অবৈধ মালামাল পেলে সংশ্লিষ্ট মালিককে রেখে দিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিক।


জানতে চাইলে ‘পাবলিক ক্যাশিয়ার’ ও ভুয়া পুলিশ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি কোনো অভিযানে যাইনি। অভিযোগ সঠিক না। সাংবাদিকদের কাছে আপনার তল্লাশির ছবি ও ভিডিও আছে বললে তিনি ফোন কেটে দেন।


ঝিকরগাছায় থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেন হোসেন বলেন, মাদক আছে খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে থানার গেটে একে ট্রাভেলসে অভিযান চালিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু না পেয়ে গাড়ি ছেড়ে দিই। সঙ্গে পুলিশ ফোর্স ছিল। দেলোয়ার নামে কেউ তার সঙ্গে ছিল না বলে দাবি করেন এসআই মোয়াজ্জেম।


বিবার্তা/তুহিন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com