শিরোনাম
পটলে দাম পাওয়ায় খুশি রাজশাহীর চাষিরা
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০১৭, ১২:৫০
পটলে দাম পাওয়ায় খুশি রাজশাহীর চাষিরা
রাজশাহী ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

ভরা বর্ষায় এবার সব সবজির দামই চড়া। তবে পটলের দাম আরেকটু বেশি। চাষিরা জানিয়েছেন, এবার পটলের ফলন হয়েছে ভালো। আর ভরা বর্ষায় এর দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। এতে তারা বেশ খুশি।


রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুরহাট জেলার অন্যতম বড় একটি সবজির বাজার। এখান থেকেই ট্রাকভর্তি সবজি যায় ঢাকায়। গত রবিবার ওই হাটে পটল বিক্রি করতে গিয়েছিলেন চাষি মোবারক আলী (৫০) আবদুল গফুর (৪৫), জুলমত শেখ (৫৫) আর জাহাঙ্গীর আলমসহ (৩০) আরো অনেকে।


তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সব চাষিই এবার পটল চাষে লাভের মুখ দেখেছেন। এবার নিয়মিত বৃষ্টিপাত পটলের ফলন এনেছে ভালো। আর বর্ষা এনেছে ভালো দাম। এমন দাম আরও কিছু দিন পেলে বিঘায় তারা কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছেন।


বিদিরপুরহাট থেকে পাইকারীতে পটল কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান রাজশাহীর কাটাখালি এলাকার সেলিম রেজা (৪০)। তিনি জানান, এই হাট থেকে প্রতিদিনই ট্রাকে পটল যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। মোহনপুর ছাড়াও পাশের পবা, দুর্গাপুর ও বাগমারা উপজেলার চাষিরা এখানে আসেন পটল বেচতে।


আরেক ব্যবসায়ী মোজাফফর হোসেন বলেন, প্রতি মণ পটল তারা পাইকারীতেই ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কিনছেন। এ অঞ্চলে অধিকাংশ পটলই চাষ করা হয় মাচায়। তাই ভালো দাম দেওয়া হচ্ছে পটলের। পটলের এ দাম গত বছরের চেয়েও ভালো। আর এখনকার এই দাম মৌসুমের শুরু থেকেই প্রায় একই রকম রয়েছে।


জেলার পটল চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান, গম ও পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে বিভিন্ন সময়ে ক্ষতির শিকার হওয়ায় তারা দিন দিন সবজি চাষের দিকেই ঝুঁকছেন। এক্ষেত্রে তারা অন্য সবজির চেয়ে পটলের আবাদ করেই বেশি লাভবান হচ্ছেন। ভালো দাম এবং সারাবছর চাহিদা থাকায় দিন দিন পটলের আবাদও বৃদ্ধি পাচ্ছে।


জেলার পবা উপজেলার আন্ধারকোঠা গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন (৩০) গত বছর ৩০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পটলের আবাদ করেন। প্রথম বছরে ব্যাপক সফলতা পান। সে কারণে চলতি মৌসুমে তিনি বাড়িয়েছেন পটল আবাদের জমি। তার সাফল্য দেখে একই এলাকার রফিকুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, কুরবান আলীসহ এলাকার আরও অন্তত ১৫ চাষি এবার পটলের আবাদে নেমেছেন।


প্রান্তিক এসব কৃষকরা জানান, জমি তৈরি থেকে শুরু করে বীজ, জৈবসার, বালাইনাশক ও মাচা তেরিসহ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমি থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার পটল উৎপাদন হয়। তারা জানান, পটলের লতা রোপণের তিন মাসের মধ্যে পটল তোলা শুরু হয়। এক টানা সাড়ে আট মাস পটল তোলা যায়। আর পটলের চাহিদা থাকে সারা বছরই।


কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলায় দিন দিন পটলের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৮০ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে। নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগতসহ সব ধরনের সহযোগিতা কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১৪ মেট্রিক টন পটল উঠেছে। আরও পটল উঠবে জমি থেকে।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, পটল উচ্চমূল্যের ফসল। সারা বছর পটলের চাহিদা থাকে। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন জেলায় পটলের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার জেলার পবা, মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর, গোদাগাড়ীসহ প্রায় সব উপজেলায় পটলের আবাদ হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পটল চাষ করেছেন পবা উপজেলার কৃষকরা।


বিবার্তা/রিমন/প্লাবন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com