শিরোনাম
গণহত্যার ইতিহাস সংরক্ষণে ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০১৭, ১৮:১৫
গণহত্যার ইতিহাস সংরক্ষণে ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

২৫ জুলাই, সোহাগপুর গণহত্যা দিবস। দিনটার কথা মনে পড়লেই বীরাঙ্গনা সমলা বেগম (৭৬) কাঁদতে থাকেন অঝোরে। একাত্তরের এদিনেই চোখের সামনে নিজের স্বামী, সন্তান আর স্বজনের মৃত্যু দেখেছিলেন তিনি।


শুধু সমলা বেগমই নন, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গণহত্যায় অনেক নারীই চোখের সামনে হারিয়েছেন নিজের স্বজনদের, পাকহানাদার বাহিনীর হাতে বিলিয়েছেন ইজ্জত।


শেরপুর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরে নালিতাবাড়ী উপজেলা কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রাম। ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই মুক্তিযোদ্ধা লুকিয়ে আছে এই অজুহাতে পাকহানাদাররা গণহত্যা চালায় গ্রামটিতে। হানাদারদের বর্বরতায় প্রাণ হারান ১৮৭ জন গ্রামবাসী, বিধবা হন ৬২ গৃহবধু, হানাদারদের লালসার শিকার হন ১৩ গৃহবধূ।


সম্প্রতি পাকিস্তানী হানাদারদের বর্বরতার শিকার ১৩ বিধবার মধ্যে ৬ জন পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। এছাড়া, এলজিইডির অর্থায়নে নুর ভানু, করফুলি খাতুন, জরিতন খাতুন, হাফিজা খাতুন, জমিলা খাতুন, ফাতেমা খাতুন, হাজেরা খাতুন, ছাহেরা খাতুন, মোছা. হাজেরা বেওয়া ও হাছেন ভানু এই ১০ বীরাঙ্গনাকে একটি করে পাকা ঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে সরকার।


অপরদিকে, সোহাগপুর বিধবা পল্লীর বিধবারা প্রতি মাসে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সহযোগিতায় জনপ্রতি ২ হাজার টাকা, ব্রাকের সহযোগিতায় জনপ্রতি ৪০০ টাকা পেয়ে থাকেন।


একাত্তরে পাকিস্তানীদের হাতে নিহত ১৮৭ গ্রামবাসীর নাম সংরক্ষণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ থাকলেও সোহাগপুরের বিধবাপল্লীর ইতিহাস সংরক্ষণে এটি যথেষ্ট নয় বলে দাবি এলাকাবাসীর।


এলাকাবাসী জানান, জীবিত এই বীরাঙ্গনারা যখন না ফেরার দেশে চলে যাবেন, তখন হয়তো মুছে যেতে পারে সোহাগপুর বিধাবাপল্লীর নাম। হয়তো নতুন প্রজন্ম বিধবা পল্লীর সঠিক ইতিহাস ভুলে যাবে। আর তাই এলাকাবাসীর দাবি, যেন ভাস্কর্যের মাধ্যমে গণহত্যার ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়।


কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ তালুকদার মুকুল বলেন, সরকার সোহাগপুরের বিধবাদের প্রতিনিয়ত সাহায্য করে যাচ্ছে। তবে তাদের জন্য নিয়মিত বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা দরকার। এছাড়া বিধবাপল্লীর ইতিহাস সংক্ষণের ব্যবস্থা নেয়াও জরুরি।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমান বলেন, সোহাগপুরের বিধবা পল্লীতে গণহত্যায় নিহতদের নামসম্বলিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ খাকলেও তা পুরাতন হয়ে গেছে। এটি খুব শিগগিরই সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/সানী/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com