শিরোনাম
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে দরপত্র নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০১৭, ০২:৩১
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে দরপত্র নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
শাহ্ আলম শাহী
প্রিন্ট অ-অ+

দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বার্ষিক কাগজ ক্রয়ের দরপত্র নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সর্বনিম্ন দরদাতাকে না দিয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ওই কাজ দিয়েছে অন্য দরদাতাকে। এতে বছরে বোর্ডের কাগজ ক্রয়ে সরকারের প্রায় ৩০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হবে বলে অভিযোগ করেছে সর্বনিম্ন দরদাতা।


শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার মূল উত্তরপত্র তৈরি এবং অতিরিক্ত ও ব্যবহারিক উত্তরপত্র মুদ্রণের জন্য উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দ্বিতীয়বারের মতো দরপত্র আহ্বান করা হয়। বোর্ডের পক্ষ থেকে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে রিম প্রতি একশো টাকা বেশি দিয়ে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।


সর্বনিম্ন দরদাতা নীলফামারীর সৈয়দপুরের ইকু পেপার মিলের মালিক মো. সিদ্দিকুল আলম বলেন, পরপর দুই দরপত্রেই আমি ওই কাজ পাওয়ার যোগ্য ছিলাম। আগের দরপত্রে আমি ৭৫ লাখ টাকা কমে টেন্ডার দিয়েছিলাম, তবুও আমাকে কাজ দেয়া হয়নি। আমি শিডিউলে উল্লেখ করা কাগজের জিএসএম ৬২ গ্রাম ও কাগজের উজ্জ্বলতা ৮০ ভাগ চাওয়া হলেও আমাদের কাগজের উজ্জ্বলতা ছিল ৮৪। দ্বিতীয়বার বিজ্ঞপ্তি হওয়ার পর শিক্ষা বোর্ডের বাক্সে দরপত্র ফেলতে গেলে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতার লোকজন আমার লোকজনকে বাধা দেন। এতে বোর্ডের লোকজনও জড়িত আছেন। পরে দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থাকা বাক্সে দরপত্র ফেলতে গেলে সেখানেও আমাদের বাধা দেয়া হয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন ও ছাত্রলীগের কর্মীর সহযোগিতায় আমার লোকজন ওই দরপত্র ফেলতে সক্ষম হন। কাজটি আমাকে না দিয়ে বেশি দামে ফেলানো দরপত্রটি গ্রহণ করা হয়েছে। ওই দরপত্র অনুযায়ী বছরে যে পরিমাণ কাগজ দেয়া হবে, তাতে শিক্ষা বোর্ডকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা বেশি দিতে হবে। এতে সরকার অন্তত ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব হারাবে।


এ ব্যাপারে ইকু পেপার মিলের ব্যবস্থাপক মো. একরামুল হক বলেন, বোর্ডের সচিব মো. তোফাজ্জুর রহমান আমাদের কাজ দেয়ার বিনিময়ে আমাকে ফোন করে তাকে (তোফাজ্জুর) ও বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ৬ লাখ টাকা দিতে বলেন। আমরা টাকা দিতে না পারায় কাজটা পেলাম না।


টাকা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জুর রহমান বলেন, ওই দরদাতা কাগজের জিএসএম রিপোর্ট দেননি। এ ছাড়া তার (দরদাতা) দেয়া নমুনা কাগজে একদিকে লিখলে অন্যদিকে লেখা চলে আসে। এসব কারণে তাকে কাজ দেয়া হয়নি।


তবে ওই দরদাতা (ইকু পেপার মিলের মালিক) সিদ্দিকুল বলেন, আমি চাহিদা মতো বোর্ডের সবকিছু পুরণ করেছি। এমনকি কাগজের উজ্জ্বলতা ৮০ চাওয়া হলেও আমার দেয়া কাগজের উজ্জ্বলতা ৮৪ ভাগ। এমন কাগজে কখনোই একদিকে লিখলে অন্যদিকে কালি আসবে না। তাঁরা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। আমাদের কাগজে সিল দেয়া আছে, দেখলে সবাই এর প্রমাণ পাবেন। বোর্ডের পক্ষ থেকে আমার কাছে ঘুষ চাওয়া হয়েছিল, আমি কম দামে কাগজ দেয়ায় ঘুষ দেয়া অসম্ভব বলে সাফ জানিয়ে দিই। আমি ঘুষ দিতে পারি নাই বলে আমাকে কাজ দেয়া হয়নি।


বিবার্তা/শাহী/মোয়াজ্জেম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com