শিরোনাম
কলাপাড়ায় চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০১৭, ২০:২১
কলাপাড়ায় চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা
উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া
প্রিন্ট অ-অ+

চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা বিরাজ করছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। একদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাইভেট প্রাকটিসে ব্যস্ত, অপরদিকে নেই পর্যাপ্ত লোকবল। ফলে পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার হতদরিদ্র মানুষ।


হাসপাতালে সিজারিয়ান কার্যক্রম থাকলেও বর্তমানে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে সেটি। এছাড়া জনবল সংকটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল, মহিপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৮টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা সেবায় বেহাল দশা বিরাজ করছে।


এছাড়া যেখানে সেখানে ময়লার স্তুপ, হাসপাতাল বাউন্ডারির মধ্যে থাকা রোড লাইট দীর্ঘদিন যাবৎ অকেজো - অভিযোগ‍ ভুক্তভোগীদের।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল ডা. আব্দুর রহিম সিভিল সার্জন হয়ে ঝালকাঠি বদলি হওয়ার পর গাইনি চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন ডা. আবদুল ওয়াদুদ। এসেই প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন তিনি। বর্তমান কর্মস্থল (ঢাকা) থেকে এসে কলাপাড়ার একটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখেন এই চিকিৎসক।


পরবর্তীতে ডা. মীরা মজিদ নামে আরো একজন গাইনি চিকিৎসক পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর এক মাস বরিশালে এবং দুই মাস ঢাকায় প্রশিক্ষণের জন্য অবস্থান করেন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে হাসপাতালে যোগদান করার পরের দিনই রহস্যজনকভাবে বদলি হয়ে যান তিনি। ফলে হাসপাতালের সিজারিয়ান কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে আছে। অথচ এই ইওসি বিভাগ চালু থাকলে প্রতি মাসে ৩০/৩৫ জন মা সিজারিয়ান সুবিধা পেতেন।


নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামের আক্কাস মিয়া(৪০) জানান, বিগত ২০ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ কয়েকদিনে বিছানার চাদর বদলানো হয়নি। বালিশের কভার নেই। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা। এমনকি হাসপাতালের খাবারের মানও বর্ণনাতীত খারাপ বলে অভিযোগ করেন তিনি।


কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. জে এইচ খান লেলিন জানান, ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটি ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। রোগীদের সমস্যা সমাধানে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।


উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নান জানান, বর্তমানে সিজারিয়ান বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া বরাদ্দ অনুযায়ী রোগীদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।


চিকিৎসা সেবা জনগণের মৌলিক অধিকার হলেও কলাপাড়ার স্বাস্থ্যবিভাগ যথাযথভাবে সে অধিকার পূরণ করতে পারছে না। তাই অবিলম্বে চিকিৎসা সেবার এই বেহাল দশা নিরসনের দাবি কলাপাড়ার সাধারণ মানুষের।


বিবার্তা/উত্তম/আমিরুল/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com