শিরোনাম
জেএসসি দেয়া হলো না জাকিয়ার
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০১৬, ১২:০২
জেএসসি দেয়া হলো না জাকিয়ার
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

জেএসসি পরীক্ষা দেয়া হলো না স্কুলছাত্রী জাকিয়া সুলতানার। বখাটে ইব্রাহিমের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত জাকিয়া বর্তমানে রাজধানীর পিলখানায় অবস্থিত বিজিবি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

 

জাকিয়াদের স্থায়ী বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার আমগাঁও গ্রামে। তবে তার পরিবার দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার লেবার লাইন পাড়া এলাকায় বসবাস করে। সে ওই এলাকার বিজিবি সদস্য মো. জমসেদ আলীর মেয়ে। বোচাগঞ্জের সেতাবগঞ্জ আইডিয়াল একাডেমী মাধ্যমিক স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী।

 

গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে বাসায় ঢুকে প্রকাশ্যে জাকিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর জমখ করে পালিয়ে যায় ইব্রাহিম চৌধুরী নামে এক বখাটে। এ ঘটনায় ওইদিন দুপুরেই পুলিশ তাকে আটক করে। বর্তমানে সে দিনাজপুর জেলা কারাগারে আছে।

 

ইব্রাহিম বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌরশহরের মিলরোড ছটকুর মোড় এলাকার কফিলউদ্দীন ওরফে বাচ্চা চেয়ারম্যানের ছেলে।

 

এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জাকিয়াকে রাস্তাঘাটে উত্যক্ত করে আসছিল ইব্রাহিম। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ইব্রাহিম। এতে জাকিয়া রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে কুপিয়ে তাকে আহত করে ইব্রাহিম। এসময় তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে পালিয়ে যায় ইব্রাহিম।

 

এ ঘটনার পর এলাকাবাসী তাৎক্ষণিকভাবে গুরুতর আহত অবস্থায় জাকিয়াকে বোচাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

সেখান থেকে বর্তমানে জাকিয়াকে ঢাকার পিলখানায় অবস্থিত বিজিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

জাকিয়ার বাবা জমসেদ আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে বখাটে ইব্রাহিম চৌধুরী আমার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি আমি ইব্রাহিম চৌধুরীর পরিবারকে জানাই। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর বোচাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

 

এদিকে পুলিশকে জানানোর কারণে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ইব্রাহিম। তার উৎপাত আরো বেড়ে যাওয়ায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয় জাকিয়া।

 

জমসেদ আলী জানান, জিডি অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নিলে আমার মেয়েকে হয়তো গুরুতর আহত হতে হতো না। শুধু তাই নয়, মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ হয়রানি করেছে। হত্যা চেষ্টা মামলা না নিয়ে নারী নির্যাতন মামলা নিয়েছে। আমি মামলাটি বিশেষ বিবেচনায় নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

 

এ ঘটনায় সেতাবগঞ্জ আইডিয়াল একাডেমী মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোলেমান শাহিন জানান, জাকিয়া সুলতানা (১৩) আমাদের স্কুলের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এবার জেএসসি পরীক্ষার্থী ছিল সে, কিন্তু পরীক্ষা দিতে পারলো না।

 

এ বিষয়ে বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল হক জানান, ঘটনার দিনই ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে ইতোপূর্বে জাকিয়ার পরিবার সাধারণ ডায়েরি করেছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র না পাওয়ায় চার্জশিট দেয়া সম্ভব হয়নি।

 

বিবার্তা/শাহী/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com