শিরোনাম
প্রবাসী টাকায় সিলেটীদের ঈদ আনন্দ
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০১৭, ১২:৪৫
প্রবাসী টাকায় সিলেটীদের ঈদ আনন্দ
খলিলুর রহমান, মৌলভীবাজার থেকে
প্রিন্ট অ-অ+

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কটারকোনা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম মিয়া। তিনি দীর্ঘ বিশ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। প্রতিবার ঈদে দেশে থাকা আত্মীয়স্বজন সবার কাছে টাকা পাঠান। আর ওই টাকা দিয়েই স্বজনরা ঈদের কেনাকাটা করেন। শুধু আব্দুর রহিম মিয়ার পরিবার নয়, সিলেট বিভাগের অনেকেই প্রবাসী। তাই সিলেটীরা প্রবাসী টাকাই ঈদ আনন্দে মেতে উঠে।


মৌলভীবাজার জেলার কয়েকজন প্রবীণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের জেলার বেশির ভাগ মানুষ প্রবাসে থাকনে। প্রত্যেক পরিবার থেকে কেউ না কেউ প্রবাসে কর্মরত রয়েছেন। তবে তাদের এলাকার বেশিভাগ মানুষ ইংল্যান্ড, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, দুবাই, কুয়েত, ইতালি, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে কমর্রত আছেন। আর ওইসব প্রবাসী ঈদে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে রমজানের প্রথম থেকেই টাকা পাঠাতে শুরু করেন বলে জানা যায়। ওই টাকা দিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঈদের কেনাকাটা করেছেন।


নবীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. জাকারিয়া হোসেন। তিনি তিন বছর থেকে কাতারে বসবাস করেন। সেখান থেকে বিবার্তাকে জানিয়েছেন, প্রতিবারের ন্যায় এবার ঈদেও তিনি গ্রামের বাড়িতে ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। আর ওই টাকা দিয়ে তার মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা নতুন কাপড় কেনাকাটা করেছেন।


জাকারিয়ার মা ফাতেমা বেগম জানান, তার ছেলে কাতারে থাকে। এছাড়া এক বোন ও এক ভাই যুক্তরাষ্ট্রে, আরেক বোন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। ঈদ আসলে তাদের কাছ থেকেও টাকা আসে। আর ওই টাকা দিয়ে আনন্দ উল্লাস করেই ঈদ উদযাপন করেন তারা।



কুলাউড়া উপজেলার ছবাপন গ্রামের বাসিন্দা স্বপ্না বেগম জানান, তার এক ভাই সৌদি আরবে বসবাস করেন। প্রতিবারের ন্যায় তিনি এবার ঈদেও দেশে টাকা পাঠিয়েছেন। আর ওই টাকা দিয়ে পরিবারের সবাই ঈদের কেনাকাটা করেছেন।


মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খালিছুর রহমান বিবার্তাকে জানান, তার বড় মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। এবার রমজানে ঈদের কেনাকাটার জন্য টাকা পাঠিয়েছে। ওই টাকা দিয়েই পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করা হয়েছে।


শুধু প্রবাসীরা টাকা পাঠিয়েছে এমনটা নয়, অনেক প্রবাসী দেশে ঈদ উদযাপন করতে দেশে এসেছেন। এমনই এক প্রবাসীর নাম লুৎফুর রহমান। মৌলভীবাজারের ওই বাসিন্দা দীর্ঘ দিন থেকে লন্ডনে বসবাস করেন। কিন্তু এবারের ঈদে তিনি দেশে এসেছেন। আত্মীয়স্বজন সবাইকে নিয়ে ঈদ উদযাপন করছেন।


তিনি জানান, রমজানের মাঝামাঝিতে তিনি দেশে আসেন। ঈদের এক সাপ্তাহ পর তিনি ফের লন্ডন চলে যাবেন।


তিনি আরো জানান, লন্ডন অন্যান্য মালামাল আসলেও কারো জন্য ঈদের কাপড় আনেননি। কেন আনেননি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই দেশের কাপড়ে চেয়ে বাংলাদেশের কাপড় অনেক উন্নত মানের। এছাড়াও স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ঈদ মার্কেটের আনন্দটা উপভোগ করতে তিনি সেই দেশ থেকে কোন কাপড় কিনেননি।


এবারের ঈদে অনেক আনন্দ উল্লাস করছে জানিয়ে লুৎফর রহমান বলেন, আমি দেশে আসার পর থেকে কয়েক দফা মার্কেটে গেছি। এ সময় স্বজনরাও আমার সাথে মার্কেটে গেছে। তারা চাহিদা মত কেনাকাটা করেছে। এতে আমি অনেক খুশি।


এদিকে, প্রতি ঈদে প্রবাসীদের পাঠানো টাকায় চাঙ্গা হয়ে উঠে সিলেট বিভাগের গ্রামীণ অর্থনীতি। তাদের পরিবারের সদস্যরা ঈদ উপলক্ষে নতুন জামাকাপড়সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেন। শহরের মার্কেটের পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়ের মার্কেটগুলোও জমজমাট হয়ে উঠে বলে জানান কুলাউড়া উপজেলার কটারকোনা বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান রহমত।


বিবার্তা/খলিল/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com