শিরোনাম
ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা পল্লীর জনপদ
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০১৭, ১৬:৩৬
ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা পল্লীর জনপদ
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

ঈদ মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে শহর ছেড়ে নাড়ির টানে সবাই গ্রামে ছুটে এসেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে গ্রামগুলোতে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর।


দিনের শুরুতে সবাই দলে দলে ছুটে যান ঈদগাহে। নামাজ শেষে চলে কোলাকুলি আর কুশল বিনিময়। এছাড়াও ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধরা পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা জানাতে ব্যস্ত।


সোমবার সকাল ৭টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।


কটারকোনা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদের নামাজ আদায় করতে দলে দলে মুসল্লিরা ঈদগাহে যাচ্ছে। নতুন কাপড় পরে আনন্দঘন পরিবেশে সবাই শরিক হচ্ছেন জামাতে।


মুসল্লিদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, ওই এলাকায় বড় একটি ঈদগাহ রয়েছে। সেই ঈদগাহের নাম কটারকোনা ঈদগাহ। সোয়া ৮টায় সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১০ থেকে ১২টি গ্রামের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। একপর্যায়ে সেই ঈদগাহে উপস্থিত হন বিবার্তার প্রতিবেদক। সেখনে গিয়ে দেখা গেছে, দলে দলে মুসল্লিরা ঈদগাহে আসছেন। কেউ কেউ প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, রিকশা, আবার কেউ কেউ ট্রাকযোগেও আসছেন। আবার হেঁটে আসছেন অনেকেই।


সঠিক সময়ে ঈদের নামাজ আদায় করা হয় সেখানে। মুফতি হাফেজ মাওলানা শুয়ায়েব আহমদের ইমাতিতে কটারকোনা ঈদগাহ ময়দানে কয়েক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।


ঈদগাহ কমিটির সভাপতি সমুজ আলী জানান, কটারকোনা ঈদগাহে ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। সেখানে হাজিরপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মুসল্লিরা এসে নামাজ আদায় করেন।


এক পর্যায়ে সকাল ৯টায় কটারকোনা গ্রামে প্রবেশ করে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। সেই গ্রামের শিশু কিশোররা দলে দলে রাস্তা দিয়ে হাটছে। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে কয়েকজন দলবদ্ধভাবে একে অপরের বাড়িতে যাচ্ছেন।



কটারকোনার বাসিন্দা মিজানুর রহমান রহমতের মেয়ে রাহেলা আক্তার বুশরা। ৬ষ্ট শ্রেণীর এই শিক্ষার্থী জানায়, প্রতি বছর ঈদে তারা দলবদ্ধভাবে একে অপরের বাড়িতে যায়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তারা ঘোরাফেরা করে। এ সময় ঈদের পিঠা, সেমাইসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিবেশন করা হয়। এটা তারা খুব উপভোগ করে। এছাড়া ঈদের দিন সালাম করলে সবাইকে সালামিও দেয়া হয় বলে জানায় বুশরা।


একই গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান। তিনি নিজেকে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে বলেন, ঈদ উপলক্ষে সবাই গ্রামে আসে। এ সময় গ্রামের পরিবেশটা আনন্দমুখর থাকে। একে অপরের বাড়িতে যায়। আনন্দ উল্লাস করে। ঈদের সময় দুই এক-দিন তাদের গ্রামে ঈদের আমেজ থাকে বলেও জানান তিনি।


কটারকোনা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, ঈদ আসলে তাদের দোকানের বিকিকিনি বেড়ে যায়। ঈদের সময় শহর থেকে আসা লোকজন বেশি কেনাকাটা করে থাকে।


শুধু কটারকোনা নয়, কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর, মনু, মন্দিরা, তুকলি, রজনপুর, পাবই গ্রামে গিয়েও একই অবস্থা দেখা গেছে। সেই গ্রামগুলো বাসিন্দারা আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে ঈদ উদযাপন করছে।


রজনপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হালিম জানান, প্রতি ঈদে তারা বেড়াতে যান। এসময় তারা মাইক্রোবাস বা বাস রিজার্ভ করেন। প্রতিবারের ন্যায় এবারও তারা সিলেটের জাফলং যাচ্ছেন বলে জানান।



হাসিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আকলুছ আলী জানান, তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। প্রতি ঈদে পরিবার নিয়ে গ্রামে আসেন। গ্রামের সবাইকে নিয়ে ঈদ করতে পারলে অনুভূতিটা ভিন্ন রকমের হয়।


এছাড়াও হাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানান, ঈদের সময় হাজার মানুষ গ্রামে আসে। তাদের ইউনিয়নে আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করা হয়ে থাকে।


বিবার্তা/খলিল/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com