গ্রামীণ ব্যাংক বিধি অনুযায়ী, কোনো কর্মকতা বা কর্মচারী তিন বছরের বেশি এক কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। কিন্তু রাজশাহী জোনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন। এখান থেকে তিনটি পদোন্নতিও পেয়েছেন। দীর্ঘদিন রাজশাহী জোনাল অফিসে থাকার কারণে তিনি কর্মচারীদের কাছে হয়ে উঠেছেন মুর্তিমান আতঙ্ক।
এই মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে বিধি বহির্ভুতভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মচারী সমিতির নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে। একই অভিযোগ উঠেছে জোন প্রতিনিধি হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধেও। হুমায়ুন কবিরও সাত বছর ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, হুমায়ুন কবির সরাসারি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় গিয়ে ব্যবস্থাপকদের বদলির হুমকি দিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। আর মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ফোনে ফোনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
গ্রামীণ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মে রাজশাহী জোনের শাখা পর্যায়ের প্রতিনিধি নির্বাচন শেষ হয়েছে। আগামীতে এলাকা প্রতিনিধি ও জোন প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রচারপ্রচারণা চলছে। নির্বাচিত শাখা প্রতিনিধিরাই এলাকা প্রতিনিধি পদে প্রার্থীতা করবেন। ব্যাংকের বিধি অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না।
কিন্তু দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার কারণে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান ও জোন প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির প্রকাশ্যে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করছেন অন্য প্রার্থীরা। আর ব্যাংকের রাজশাহী জোনের খুবই প্রভাবশালী এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না। বদলী আতঙ্কে তাদের কেউ বাধাও দিতে পারছেন না।
তবে এ ব্যাপারে একজন প্রার্থী জোনাল ম্যানেজার ও অডিট অফিসারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। ওই প্রার্থী জোনাল ম্যানেজারকে বলেছেন, মোখলেছুর রহমান ও হুমায়ুন কবীর তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সাদা কাগজে ভোটারদের কাছ থেকে আগাম স্বাক্ষর করে নিচ্ছেন, যাতে ভোটাররা তাদের ভোট ওই দুই কর্মকর্তার পছন্দের প্রার্থীকে দিতে বাধ্য হন।
নির্বাচনের অন্য প্রার্থীরা জানিয়েছেন, এই দুই কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধের প্রার্থীকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। মুঠোফোনে তাদের কথাবার্তার একটি রেকর্ড থেকে জানা যায়, তারা একজন প্রার্থীকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজশাহীতে ‘নিরাপদে’ থাকতে হলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলছেন। তাদের বিরুদ্ধে এ রকম অনেক অভিযোগ রয়েছে। ভয়ে অনেকেই মুখ খুলছেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘দু’একজন প্রার্থীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। তাই ওদের সঙ্গে ঘুরতে দেখে হয়তো অন্য প্রার্থীরা মনে করছেন, আমি তাদের ভোট করছি। কিন্তু বিষয়টি এমন না। যেই নির্বাচিত হবে, সেই ওয়েলকাম। আমি কারো ভোট করছি না।’
অভিযোগ অস্বীকার করে হুমায়ুন কবির বলেন, এটা কর্মচারিদের নির্বাচন। আমি তো দেড় বছর আগে কর্মকর্তা হয়ে গেছি। আমার নিজের ভোট করার সুযোগ নেই। কোনো প্রার্থীর হয়ে ভোট করতেও পারবো না। তাই করছিও না। সব প্রার্থীই আমার পছন্দের।
বিবার্তা/রিমন/সোহান
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]